সীতারাম মুখোপাধ্যায়, আসানসোল: নির্মীয়মাণ জলের রিজার্ভের পাটা খুলতে গিয়ে মারণ গ্যাসের ছোবল। তাতে মৃত্যু হলো রাজমিস্ত্রী ও হেল্পারের। বুধবার সাতসকালে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে বিধাননগরের পার্ক এ্যাভিনিউতে। জলের রিজার্ভার থেকে পাটা খুলতে গিয়ে বিষাক্ত মারণ গ্যাসে মৃত্যু দুজনের মধ্যে রাজমিস্ত্রীর বাবলু ওরফে হুমায়ুন শেখ (৫৫) । তার হেল্পারের নাম ও ঠিকানা পুলিশ জানাতে পারেনি। মৃত হুমায়ুনের বাড়ি মুর্শিদাবাদে। তিনি দূর্গাপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন ও রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন।
দুর্গাপুরের বিধাননগরের পার্ক এ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা কাঞ্চন লায়েক বলেন, ঘটনাটি ঘটে যে বাড়িতে, তার মালিকের নাম সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের । তিনি বছর তিন আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান । তার পরিবারের সদস্যরা এখন বাইরে থাকেন। এই বাড়ির জলের রিজার্ভার লিক হয়ে যায়। তাই নতুন করে সেই জলের রিজার্ভার ঢালাই করে তৈরি করা হয় । সেই কাজটি করেন রাজমিস্ত্রী বাবলু ওরফে হুমায়ুন শেখ। এদিন সকালে হুমায়ুন ও আরো দুজন আসেন রিজার্ভারের ঢালাইয়ের পাটা খুলতে। প্রথমে একজন ঐ রিজার্ভারের ভেতরে নামে। কিন্তু মিনিট পরে ভেতর থেকে কোন আওয়াজ পাওয়া যায়না। তার খোঁজে এরপরে রাজমিস্ত্রী হুমায়ুন শেখ নামেন। তিনিও আর উপরে উঠেননি ।
সেই ঘটনা প্রতিবেশী কাঞ্চন লায়েক জানতে পারেন। তিনি পুলিশ এবং দমকলে খবর দেন । মিনিট দশেকের মধ্যে পুলিশ এবং দমকল আসে। দমকলকর্মীরা বেশ কিছুক্ষনের চেষ্টায় রিজার্ভারের ভেতর থেকে দুজনকে উদ্ধার করে বিধাননগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকেরা বলেন, বন্ধ থাকা জলের রিজার্ভারের ভেতর মারণ গ্যাস কার্বন মনোক্সাইড ছিলো। দুজন পরপর তার ভেতরে নামতেই সেই গ্যাসের ছোবলে পড়েন। তাতে দমবন্ধ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হবে। তার রিপোর্ট পেলে জানা যাবে ঠিক কি কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।