কঙ্কালীতলায় নদীর ড্যামের ঝোঁপ থেকে উদ্ধার মৃতদেহ

বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনের ছাত্রের রহস্য-মৃত্যুতে তদন্ত দাবি

খায়রুল আনাম:  প্রতিবেশীর অস্থি বিসর্জন দিতে গিয়ে বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনের মিউজিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মহাদেব হাজরার (২৪) নদীর জলে ডুবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১ আগস্ট ওই ছাত্রের ‘রহস্য-মৃত্যু’ নিয়ে বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবন-সহ গোটা বিশ্বভারতী ও বোলপুর জুড়ে জোর চর্চ্চা চলেছে। পুলিশ সমস্ত বিষয়টিই খতিয়ে দেখছে। ওই ছাত্রটির বাড়ি বোলপুর পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কালীমোহনপল্লীতে। মৃত ছাত্র মহাদেব হাজরা বাবা সুনীল হাজরাও ছেলের রহস্য-মৃত্যু নিয়ে তদন্ত দাবি করে জানিয়েছেন, ছেলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি থেকে বের হয়েছিল কঙ্কালীতলায় কোপাই নদীতে অস্থি বিসর্জন দিতে। তাঁর সঙ্গে আরও ন’জন ছিলো। তাঁদের মধ্যে চারজন নদীর জলে নেমেছিলো।

মঙ্গলবার ৩০ জুলাই স্থানীয় নবকুমার মণ্ডল নামে এক বৃদ্ধ মারা গেলে তাঁকে দাহ করা হয় বোলপুরের সুখনগর শ্মশানে। তাঁরই অস্থি বিসর্জন দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কঙ্কালীতলায় কোপাই নদীতে। সেখানেই ঘটে এই দুর্ঘটনাটি। মৃতের বাবা সুনীল হাজরার আরও অভিযোগ, অস্থি বিসর্জন দিয়ে কোপাই নদী থেকে সকলে স্নান করে উঠে এলেও আমার ছেলেই নদীতে থেকে গেল। আমরা চাইছি, পুলিশ প্রকৃত ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। এটি নিছক দুর্ঘটনা না কী, মহাদেব হাজরাকে মেরে ফেলে হয়েছে তা তদন্ত করে দেখতে হবে।


মহাদেব হাজরা নামে বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনের ওই ছাত্র কঙ্কালীতলায় কোপাই নদীতে অস্থি বিসর্জন দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় তাঁর সন্ধান শুরু হয়। কিন্তু কোনও সন্ধান পাওয়া না যাওয়ায় ওই ছাত্রের বাবা সুনীল হাজরা বুধবার ৩১ জুলাই বোলপুর থানায় ছেলের কোপাই নদীর জলে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রিকি আগরওয়াল পুলিশবাহিনী নিয়ে কঙ্কালীতলায় গিয়ে কোপাই নদী এলাকায় নিখোঁজ ছাত্রের সন্ধান শুরু করেন। কলকাতা থেকে ডাকা হয় উদ্ধারকারী দলকে। সেইসাথে স্থানীয়ভাবেও সন্ধান চালানো হতে থাকে। কলকাতা থেকে উদ্ধারকারী দল পৌঁছনোর আগেই কোপাই নদীর ড্যামের একটি জঙ্গল থেকে নিখোঁজ ছাত্র মহাদেব হাজরার মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ উদ্ধার হওয়া মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। ওই ছাত্রের বাবা এটি দুর্ঘটনা না কী তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করে নিরপেক্ষ তদন্তের যে দাবি করেছেন, সে বিষয়ে অবশ্য পুলিশ কোনও মন্তব্য না করে জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা যাবে না।