বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামারার মধ্যবর্তী স্থানে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এই ঝড়ের প্রভাব লক্ষ্য করা যায় পশ্চিমবঙ্গেও। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর।
বিপদের আশঙ্কায় গতকালই দিঘা সমুদ্র সৈকত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পর্যটকদের। মাইকিংয়ের মাধ্যমে চলে পর্যটকদের সতর্কীকরণ।
এখন পর্যটন মরশুম। সেই আবহে পর্যটকদের আবারও সৈকতমুখী করতে এবং ব্যবসার ক্ষয়ক্ষতি মেটাতে, দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরই দিঘা পুনর্গঠনের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘দিঘায় আজও খুব বৃষ্টি হবে। কাঁথি, রামনগরেও হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা সতর্ক থাকতে হবে। আর যা যা ক্ষতি হয়েছে, তা দ্রুত মেরামত করে ফেলতে হবে। দিঘায় অনেক পর্যটক যাবে। তাদের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখতে হবে।‘
উপকূলবর্তী এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব পড়েছে বিস্তর। ‘দানা’র ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ হলেও এখনও গোটা রাজ্যজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় এখনও উপস্থিত জাতীয় ও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে পূর্বাভাস ছিল, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে স্থলভাগের দূরত্ব যত কমবে, তত সমুদ্র উত্তাল হবে। দেখা দেবে তীব্র জলোচ্ছ্বাস। সেই আশঙ্কায়, গতকাল দুপুর থেকেই ফাঁকা করে দেওয়া হয় সৈকত চত্বর। যার জেরে হতাশ হয়ে পড়েন পর্যটকরা।
আগের যেকোনো ঝড়ের মত এবারও ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্থ দিঘার মতো উপকূলীয় এলাকা। সেইসব এলাকা দ্রুত পুনর্গঠন করে ম্যানগ্রোভ অরণ্য গড়ে তোলার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার গোটা রাত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র উপর নজর রাখার জন্য নবান্নে রাত জাগেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আবারও বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসককে সরাসরি বললেন, ‘দুর্যোগের সময় ঘন ঘন আপডেট দিয়েছেন আপনারা। আমি জেলার পরিস্থিতি সবটাই জানি। প্রশাসনের সব স্তরের অফিসারদের নিয়ে বিপদ মোকাবিলায় যা প্রয়োজন, করবেন। ম্যানগ্রোভ ভালো করে লাগাতে হবে ওখানে। আর দিঘার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। ওখানে যে জগন্নাথ মন্দির তৈরি হচ্ছে, সেটা ঠিক আছে তো? খেয়াল রাখবেন, কোনও ক্ষতি যেন না হয়। আর এখনই এনডিআরএফ, এসডিআরএফ-কে তুলবেন না। আগামী ৪৮ ঘণ্টা দুর্যোগ চলতে পারে। ওদের কাজে লাগবে।‘