পদ্মফুলের বাড়বাড়ন্তে আতঙ্কিত সিপিএম পাশে চাইছে তৃণমূলকে

পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Photo: IANS)

স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে বাংলাজুড়ে যাঁরা বুথে বুথে সিপিএমকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই করছেন, তাদের বাঁচানাের জন্য তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হলেন বিধানসভায় বিরােধী দলনেতা সুজন চক্রবর্তী।

২০১৯ পশ্চিমবঙ্গে লােকসভা নির্বাচনের ট্রেন্ড- সিপিএমের ভােট বিজেপির দিকে যাওয়া। শেষ দফার নির্বাচনের পর বিভিন্ন এক্সিট পােলে বিজেপির ফুলেফেঁপে ওঠার যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তার মূল কারণ নিজেদের পিঠ বাঁচাতে অধিকাংশ বাম কর্মীর পদ্মফুলের নীচে আশ্রয় নেওয়া। দলের অস্তিত্ব, প্রাসঙ্গিকতা, গুরুত্ব পুরােটাই যে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেটা বুঝে আপাতত শিবরাত্রির সলতের মতাে জেগে থাকা পার্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে পার্টি সদস্যদের বাঁচানােটাই যে অগ্রাধিকার, সেটা বুঝে মঙ্গলবার পার্থবাবুকে ফোন করেন সুজনবাবু। বিজেপির সন্ত্রাসের কাছে বাকি কর্মীরাও যাতে আত্মসমর্পণ না করে তার জন্যই কর্মীদের বাঁচাতে পার্থর শরণাপন্ন হয়েছেন সুজনবাবু।

পার্থ সুজনের এই কাতর আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যজুড়ে সিপিএমকে বাঁচাতে কী পদক্ষেপ নেন, সেটার দিকেই অবশ্যই লক্ষ থাকবে। আপাতত লক্ষ্য ২৩ মে। ওই দিন গণনাকেন্দ্রে দলীয় কর্মীদের কর্তব্য কী হবে তার দিক নির্দেশিকা ঝাড়গ্রাম থেকে দিয়ে দেন পার্থবাবু। তিনি জানিয়েছেন, কর্মীদের আগের দিনই গণনাকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছে যেতে হবে। ভালােভাবে ঘুমিয়ে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন সকাল সকাল গণনাকেন্দ্রে পৌঁছে যেতে হবে। গণনাকেন্দ্রে প্রত্যেক কাউন্টিং এজেন্টকে সতর্ক থাকতে হবে। একটানা একজনকেই বসে থাকতে হবে। এজেন্টের খাবার এবং জল সময়মতাে যাতে পৌঁছে যায় তার জন্য জেলার সভাপতি এবং প্রার্থীদের নজরদারি চালাতে হবে। পার্থের নিদান, গণনাকেন্দ্রে টেবিলে বসে ঢুললে হবে না। রাজ্যের একাধিক কেন্দ্রে কার্যরত কাউন্টিং এজেন্টদের গণনা চলাকালীন সতর্ক থাকতে হবে, চোখ খােলা রাখতে হবে।


এদিন ঝাড়গ্রামে আসেন পার্থবাবু। বিভিন্ন বিধানসভাভিত্তিক ফলাফল যেমন হতে পারে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। নয়াগ্রাম, গােপীবল্লভপুরে বিজেপি ভালাে ফল করলেও ঝাড়গ্রাম, বিনপুর, গড়বেতায় তৃণমূল ভালাে ফল করবে। তৃণমূল বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে গড়বেতার কথা। গড়বেতা থেকেই বীরবাহার সংসদে পোঁছনাের পথ প্রশস্ত করে দেওয়া হবে বলে পার্থবাবুকে দলের পক্ষ থেকে ব্রিফ করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল দেখে বিজেপি এলাকায় লাড্ডু বিতরণ শুরু করে দিলেও ঝাড়গ্রাম ধরে রাখার ব্যাপারে তৃণমূল আশাবাদী। তাদের বক্তব্য, বিজেপি হাওয়ায় ভাসছে। সংগঠনের উপর নির্ভর করেই তৃণমূল জয়ী হবে। গড়বেতায় বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী আশাবাদী, তাঁর বিধানসভা থেকেই প্রার্থী বিপুল ব্যবধান তৈরি করবেন বিজেপির সঙ্গে।