শূন্যের গেরো ঠেকাতে মরিয়া সিপিএম। কিন্তু যে ভাবে পার্টির মধ্যে কোন্দল চলছে, তার জন্য বারবার ঢোক গিলতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে। পার্টির নিয়ম ভেঙে পদে রেখে দেওয়া ৩ জেলা সম্পাদককে তুমুল সমালোচনার মুখে পরে তাঁদের সরাতে চলেছে সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব। কোচবিহার, মালদহ ও পূর্ব মেদিনীপুর, এই ৩ জেলা কমিটির সদ্য বসানো সম্পাদকদের বদল করতে পারে আলিমুদ্দিন বলে শোনা যাচ্ছে।
সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, দলের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনন্ত রায়কে জেলা সম্পাদক করা হয়েছে। পার্টি খসড়ায় বলা হয়েছে, ৭০ বছর বয়সের বেশি কেউ জেলা কমিটির সম্পাদক থাকতে পারবেন না। কোচবিহারে জেলা সম্পাদকের দাবিদার ছিলেন মহানন্দ সাহা। কিন্তু তাঁকে নিয়ে আপত্তি ছিল অনন্ত আরও এক রাজ্য নেতার। সিপিএম চেয়েছিল কোচবিহার জেলায় কোনও রাজবংশী মুখ সম্পাদক হন। কিন্তু তেমন কাউকে পাওয়া যায়নি। আবার অনন্ত রাজবংশী অংশের প্রতিনিধি। তাই তাঁকেই বয়স বিধি ভেঙে ফের সম্পাদক করা হয়।
সিপিএমে নিয়ম, এক ব্যক্তি একটি স্তরে তিনবারের বেশি সম্পাদক থাকতে পারবেন না। কিন্তু মালদহে অম্বর মিত্রকে চতুর্থবারের জন্য জেলা কমিটির সম্পাদক করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরেও নিরঞ্জন সিহি তিনবারের মেয়াদ পূর্ণ করে চতুর্থবারের জন্য জেলা সম্পাদক হয়েছেন। সূত্রের খবর, এই মালদহ ও পূর্ব মেদিনীপুরে বিকল্প নাম নিয়ে একাধিক মত ছিল। তাই কোন্দল ও অশান্তি এড়াতেই পার্টির নিয়ম লঙ্ঘন করে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবার বাঁকুড়ার জেলা সম্পাদক করা হয়েছে দেবলীনা হেমব্রমকে। এই প্রথম মহিলা মুখকে জেলা সম্পাদক করেছে সিপিএম।
দ্বন্দ্ব এড়াতেই দেবলীনাকে সম্পাদক পদে বসানো হয়েছে। তবে দেবলীনার ক্ষেত্রেও অবশ্য পার্টির নিয়ম ভাঙা হয়েছে। সিপিএমে কোনও ব্যক্তি একইসঙ্গে তিনটি পদে থাকতে পারেন না। কিন্তু রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়া সত্ত্বেও দেবলীনাকে আবার জেলা সম্পাদক করা হয়েছে। তবে দেবলীনা জেলা সম্পাদক থাকবেন। কিন্তু নিরঞ্জন সিহি, অনন্ত রায় ও অম্বর মিত্রকে জেলা সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। কারণ, কেন নিয়ম অগ্রাহ্য করে পুরনোদের জেলা সম্পাদক পদে আবার বসানো হল, তা নিয়ে গত রাজ্য কমিটির বৈঠকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে। আবার সিপিএম এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সদ্য শেষ হওয়া পার্টির রাজ্য সম্মেলনেও প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বয়সের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?’ ফলে বিড়ম্বনা এড়াতে তিন জেলা সম্পাদক বদলের পথেই যাচ্ছে আলিমুদ্দিন।