জ্যোতি বসু নগর নামই রাখা হোক নিউটাউনের,বামেদের চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

জ্যোতি বসু(File Photo: IANS)

সােমবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ১০৬ তম জন্মদিনে নিউটাউনের জ্যোতি বসু নগর নাম ফিরিয়ে আনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত আবেদন পাঠালেন বামফ্রন্টের বিধায়করা।এর আগেও এই মর্মে মমতার কাছে দরবার করেছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী,অশােক ভট্টাচার্য এবং রবীন দেব।

এছাড়া জ্যোতি বসু স্মারক গবেষণা কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত জমিও আইনি জটিলতা থেকে বাঁধনমুক্ত করার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা।সোমবার সুজন চক্রবর্তী বিধানসভায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,রাজারহাট এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে আধুনিক নগর পরিকল্পনার রূপকার ছিলেন জ্যোতি বসু।কলকাতার আশেপাশে বিভিন্ন আর্থ সামাজিক অবস্থার মানুষের জন্য নগর গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী গৌতম দেবকে।তাই স্বাভাবিক ও সঙ্গত কোনও কারণেই ওই প্রস্তাবিত নগরের নাম রাখা হয় জ্যোতি বসু নগর।

কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরই জ্যোতি বসু নগরের নাম খারিজ করে দিয়ে নিউটাউন নাম রাখা হয়।সুজনবাবু বলেন,এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক সংকীর্ণতাই প্রকাশ পায়।১৯৮৩ সালে জ্যোতি বসু সল্টলেকের নাম পরিবর্তন করে সরকারিভাবে বিধাননগর রাখেন।এভাবেই একজন কমিউনিস্ট নেতা তাঁর গণতান্ত্রিক বােধের পরিচয় দেন।


সুজনবাবু প্রশ্ন করেন,তৃণমূল সরকারের কি ন্যূনতম গণতান্ত্রিক বােধ নেই ? নাকি তাঁরা জ্যোতি বসু নামকে ভয় পান ? সেই কারণেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত জলাধারের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছেন নিজেদের ইচ্ছেমতাে।জ্যোতি বসু নগর নামকেও মুছে দিতে চেয়েছেন।

পুর ও নগরােন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের যুক্তি অবশ্য ভিন্ন।তিনি বলেন,জ্যোতি বসু নগর নামটির চেয়েও নিউটাউন নামটিই স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রচলিত হয়ে আসছে।অফিসের ঠিকানা,বাসস্টপেজের নাম নিউটাউন হিসেবেই দেশ বিদেশের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে গিয়েছে।তাছাড়া ফিরহাদ হাকিমের মতে,একটা টাউনশিপের নাম জ্যোতি বসু নগর করতে হলে তা মন্ত্রিসভায় পাশ করাতে হত।তা না করায় আইনি প্রথা মেনে জ্যোতি বসু নগর নামটি বৈধতা পায়নি।

ফিরহাদ হাকিমের এই যুক্তিও মানতে নারাজ সুজন চক্রবর্তী।তিনি বলেন ,সরকারি কলকাতা গেজেটের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০১০ সালের ৩ ডিসেম্বর,৩৫ নম্বর বিলে বলা হয়েছে নতুন টাউনশিপ-এর জ্যোতি বসু নগর নামটি সর্বজনসন্মতভাবে পাশ হয়ে যায়।সেই তথ্য হয়তাে বর্তমান মন্ত্রীর জানা নেই।আর জ্যোতি বসুর মতাে মানুষের নামাঙ্কিত জ্যোতি বসু নগর নামটি ফিরিয়ে আনতে হলে বিধানসভায় তা ফের পাশ করিয়ে নেওয়াই যায়।আসলে তৃণমূল সরকার তেইশ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মানুষটির প্রতি স্বাভাবিক শ্রদ্ধা জানাতে চায় না বলেই এইসব যুক্তি দিচ্ছে।জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত মিউজিয়াম ও রিসার্চ সেন্টার তৈরির জন্য যে জমি বামেরা কিনে রেখেছে,আইনি জটিলতার দোহাই দিয়ে সেই  জমির ভবিতব্য নিয়েও চিন্তিত বামেরা।