মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থার মামলায় সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকে জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এক মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থার অভিযোগে তন্ময়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় ১০ হাজার টাকার বন্ডে মঙ্গলবার তন্ময়কে জামিন দিল আদালত। অবশ্য জামিন মিললেও বেশ কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে প্রাক্তন এই বিধায়ককে।
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, তন্ময় ভট্টাচার্যকে থানায় নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে। তাঁকে তদন্তে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে হবে। অভিযোগকারিণীর সঙ্গে তিনি কোনও যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। গত ২৭ অক্টোবর ফেসবুক লাইভে এক মহিলা সাংবাদিক সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তন্ময় ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন।
সোশাল মিডিয়ায় লাইভ করে ওই সাংবাদিক বলেন, আজ সকালে আমার অ্যাসাইনমেন্ট ছিল। ৪ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। এমন ঘটনা আমার সঙ্গে হয়নি।…সমাজে এরকম মানুষ থাকেই। যারা পোটেনশিয়াল রেপিস্ট হয়। সব পুরুষ এমন নয়। পুরুষ জাতের মধ্যে এরকম কিছু কীট থাকে।
তিনি আরও বলেন, ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে যখন উনি আমার কোলে বসে পড়েন আমি তখনই বলি, এরকম করবেন না। এগুলো আমি পছন্দ করি না। আপনি ইয়ার্কি করেছেন আমি মানছি, কিন্তু এরকম আমার সঙ্গে করবেন না। তাও তিনি আমার কোলে বসে পড়েন। ক্যামেরাটা যদি তখন অন থাকত তাহলে ভালো হত।
হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পর, দলের সদস্য পদ থেকে তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করে সিপিএম। এই প্রসঙ্গে তন্ময় অবশ্য বলেছিলেন, ভদ্রমহিলার ওজন ৪০ কেজির বেশি নয়। আমার ওজন ৮৩ কেজি। ৮৩ কেজি ওজনের এক জন পুরুষ মানুষ যদি ৪০ কেজি ওজনের এক মহিলার কোলে বসে পড়েন, তা হলে সেই মহিলা শারীরিক ভাবে ফিট থাকে কি না, আমি জানি না। এটা পরিকল্পিত কুৎসা।
একাধিক বার তন্ময় ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদও করে বরানগর থানার পুলিশ। যদিও বারবারই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকারও করেছেন তন্ময় ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, এই মেয়েটির সঙ্গেও আমি ইয়ার্কি ফাজলামি করেছি। এর আগে একাধিকবার এসেছে একাধিকবার ইয়ার্কি করেছি। একটু খ্যাপাই।
সম্প্রতি তন্ময় ভট্টাচার্যকে বরানগর থানা জানিয়ে দেয়, তাদের আর কোনও প্রশ্ন জানার বিষয় নেই। এরপর গত শুক্রবার তন্ময় ভট্টাচার্যের উপর থেকে সাসপেনশন তুলে নেয় সিপিএম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম তিনি উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীকে জানিয়ে দেন, তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে যে সাসপেনশন ছিল, সেটা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।