• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

ঝাড়খণ্ড-বীরভূম হয়ে বাংলাদেশে দেদার পাচার হচ্ছে গোরু

ঈদুজ্জোহার আগের শেষ মুহূর্ত খায়রুল আনাম, ১২ জুন– লোকসভা ভোটপর্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাগাতার টহলের পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ড হয়ে বীরভূম জেলার উপর দিয়ে মুর্শিদাবাদ সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে যে গোরু পাচার হয়ে থাকে, তা একেবারে বন্ধ না হলেও, তাতে রাশ পড়েছিল অনেকাংশে। বর্তমানে এখনও বীরভূম জেলায় অল্পবিস্তর কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও, তার প্রাধান্য কম। এদিকে সামনের সোমবার ১৭

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

ঈদুজ্জোহার আগের শেষ মুহূর্ত

খায়রুল আনাম, ১২ জুন– লোকসভা ভোটপর্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাগাতার টহলের পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ড হয়ে বীরভূম জেলার উপর দিয়ে মুর্শিদাবাদ সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে যে গোরু পাচার হয়ে থাকে, তা একেবারে বন্ধ না হলেও, তাতে রাশ পড়েছিল অনেকাংশে। বর্তমানে এখনও বীরভূম জেলায় অল্পবিস্তর কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও, তার প্রাধান্য কম। এদিকে সামনের সোমবার ১৭ জুন ঈদজ্জোহা অনুষ্ঠিত হবে। তাই এই সময় বাংলাদেশে গোরুর বিরাট চাহিদা থাকায় গোরু পাচারের রমরমাও শুরু হয়ে গিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ-ঝাড়খণ্ড হয়ে বীরভূম জেলাকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশে গোরুপাচার অতি সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। এই পাচার চক্র বিশেষ জায়গায় পৌঁছে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই গোরুপাচারের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই জেলা থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তিনি এখন রয়েছেন দিল্লির তিহার জেলে। তাঁর সাথেই তিহার জেলে রয়েছেন তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল ও অনুব্রত মণ্ডলের সরকারি দেহরক্ষী সেহগাল হোসেন। তাঁরা জেলে থাকলেও গোরুপাচারের রমরমা কমেনি। এখন উত্তরপ্রদেশ-ঝাড়খণ্ড ছাড়াও জেলার ইলামবাজারের সুখবাজার পশুহাট, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট, লোহাপুর ও পার্শ্ববর্তী পূর্ব বর্ধমান জেলার পাঁচুন্দী, কৈচর পশুহাট থেকেও গোরু কিনে তা পাচার করা হচ্ছে।

অপেক্ষাকৃত ছোট মোটর চালিত যান ও নম্বর প্লেটবিহীন বা ভুয়ো নম্বর প্লেট লাগানো পিকআপ ভ্যানে গাদাগাদি করে গোরুপাচার করা হচ্ছে সীমান্ত পর্যন্ত। সেখান থেকেই গোরুগুলি পাচার হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। মাঝেমধ্যে পুলিশি টহলে ‘কেস দেখাতে’ পাচারের আগে গোরু আটক করা গেলেও, পাচারকারীরা ‘পালিয়ে গিয়েছে’ বলা হয়। এই গোরুপাচারের অন্যতম সংযোগস্থল রামপুরহাটের চামড়া গুদাম মোড় হয়ে গোরুগুলি ভাঁড়শাল মোড় দিয়ে দুনিগ্রাম সড়ক ধরে চাঁদপাড়া, ঝিল্লি গ্রাম হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে। তারপর গোরুগুলিকে নির্দিষ্ট লোকের মাধ্যমে সীমান্ত পার করিয়ে ‘ঠেলে দেওয়া’ হচ্ছে বাংলাদেশে। বড় গাড়ি ভর্তি করে জাতীয় সড়ক ধরে প্রকাশ্য দিনের আলোয় গোরুপাচার হলেও, কোনও এক অদৃশ্য কারণে গোরুপাচারের সময় প্রশাসনের চোখে অন্ধকার নেমে আসে। গোরু যখন যে গাড়িতে পাচার হয়, সেই গাড়ির পিছনে পাচারকারীদের মোটরবাইক বাহিনী তা পাহারা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়ে। আবার দুধের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ার পরে এমনও দেখা গিয়েছে যে, সেই দুধের গাড়িতে দুধের পরিবর্তে গোরু ভর্তি করে পাচার করা হচ্ছিল। এই সমস্ত এলাকায় পুলিশের নজর এড়াতে বড় গাড়ির পরিবর্তে ছোট যন্ত্রচালিত ছোট ভ্যানে গোরু চাপিয়ে তা এলাকার এক শ্রেণির দালালদের সঙ্গে যোগসাজশে গ্রামের ভিতরের অপেক্ষাকৃত সরু রাস্তা দিয়েও পাচার হয়ে যাচ্ছে নির্দ্ধিধায় ।।