উত্তরবঙ্গে করোনা আক্রান্তের মৃত্যু, বিক্ষোভ মেডিকেলে

প্রতীকী ছবি (File Photo: AFP)

রবিবার গভীর রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল ও কলেজ ও হাসপাতালে করোনা সন্দেহে ভর্তি হওয়া কালিম্পংয়ের এক মহিলার মৃত্যু হয়। সেই মহিলা ভিন রাজ্য থেকে এসেছিলেন। শিলিগুড়ি বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ি জ্যোতিনগর হয়ে কালিম্পং ফিরেছিলেন।

সেখানে তার জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিলে তাকে ভর্তি করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে তার লালা রসে রিপোর্টে পজিটিভ আসে রবিবারই। তাকে আইসোলেশনে রেখে বিশেষভাবে চিকিৎসা হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়।

তার সঙ্গে কারা কারা এসেছিলেন সে বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে প্রাথমিকভাবে তার সংস্পর্শে আসা সাতাশ জনকে কোয়ারানটাইনে পাঠানো হয়েছে, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কয়েকজনকে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ওই মহিলার নিকটাত্মীয়রা রয়েছে।


এদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রী নেই বলে সোমবার মেডিকেলের সুপারের চেম্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখান মেডিকেলের নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। তারা অভিযোগ করেন তাদের কাছে করোনা সন্দেহজনক রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব রয়েছে।

যদিও পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা থেকে এনিয়ে খোঁজখবর করেন। তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার আরও উন্নত ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কালিম্পংয়ের মহিলার কিভাবে মৃত্যু হল তা নিয়েও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মৃতার পরিবার চিকিৎসায় ক্রটি রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে। এদিকে সোমবার থেকেই উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভাইরাস রিসার্চ এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাব চালু হয়েছে। শুরুতে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করোনা সন্দেহে পাঁচ জনের সোয়াব পরীক্ষা করা হয়। আরও তিন জনের সোয়াব সোমবারই পরীক্ষা করা হবে বলে মেডিকেল সুপার কৌশিক সমাজদার জানিয়েছে।

অন্যদিকে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রোগীদের লালা রসের পরীক্ষার কাজ অনেক দেরিতে শুরু হয়েছে। এই উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের লালা রসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছিল কলকাতার নাইসেডে। এতে রোগীর পরিবার উদ্বেগে থাকছিলেন।

বিজেপি নেতা শ্যামলা সাহাও অভিযোগ করেন, করোনা সন্দেহভাজনদের চিকিৎসা দ্রুতগতিতে উত্তরবঙ্গে শুরু করা উচিত ছিলো। কিন্তু তা হয়নি। এতে রোগী ও তাদের পরিবারের লোকেরা চিন্তায় পড়েন। কলকাতাতে যেমন করোনা সন্দেহভাজনদের দ্রুতগতিতে চিকিৎসা শুরু হয় তেমনভাবেই উত্তরবঙ্গের প্রতি নজর দেওয়া উচিত ছিলো বলে শ্যামলবাবু জানান।

অপর দিকে করোনায় মৃত্যু হওয়া কালিম্পংয়ের মহিলার দেহ পুলিশ পাহারায় দাহ করা হয় শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া সাহুডাঙি শ্মশানঘাটে। সেখানে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার আগে সাহুডাঙি এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ যাতে ওই শ্মশানে দাহ করতে না হয় তার জন্য বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।