জুলাইয়ে কোচবিহার-বাংলাদেশ ট্রেন

কলকাতা, ২৯ জুলাই: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য অনুষ্ঠিত ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে রেল নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে তার অন্যতম হল বাংলাদেশ থেকে কোচবিহার পর্যন্ত রেল পরিষেবা৷ আগামী মাসে এই পথ ধরে প্রথমে চলবে একটি খালি মালগাডি়৷ এইভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে নিয়মিত যাতায়াত করবে পণ্যবাহী রেল বা মালগাডি়৷ তারপর যাত্রী ট্রেন যাতায়াতের কথাও বিবেচনায় আছে৷ এই পরিষেবার প্রথম স্টপেজ ভারতের নদিয়ার গেদে৷ সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে প্রথমে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা-ঈশ্বরদী-নাটোর-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-নীলফোমারি-চিলাহাটি হয়ে ভারতের কোচবিহার৷  এই রেলপথ নিয়ে ভারতের বিদেশ সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা জানান, জুলাই মাসেই এই নয়া রেল পথে ভারতের ট্রেন চলবে৷

হাসিনা সফর শেষ করে ঢাকা ফেরার আগেই এই নয়া রেল চুক্তি নিয়ে সে দেশের বিরোধী দলগুলি সরব হয়৷ প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বক্তব্য, হাসিনা সরকার ভারতের হাতে দেশের রেল ট্রানজিট তুলে দিচ্ছে৷ এটা দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়ার শামিল৷ শেখ হাসিনাও পাল্টা বলেছেন, অতীতে যে রেলপথগুলি চালু ছিল সেগুলিই ভারতের জন্য উম্মুক্ত করা হচ্ছে৷ বিনিময়ে বাংলাদেশে বিপুল টাকা রাজস্ব অর্জন করবে৷ বাংলাদেশের রেলেরও উন্নতি হবে৷

এখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পাঁচটি রেল রুট চালু আছে৷ এর তিনটি যাত্রী এবং দুটি মালগাডি়র রুট৷ এই রুটগুলিতে ট্রেন ক্রস ইন্টারচেঞ্জ পদ্ধতিতে চলে৷ দুই দেশের চালক ও গার্ডরা তাঁদের দেশের ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেনটি সীমান্তে পৌঁছে দেন৷ পরে যে যাঁর দেশের ইঞ্জিন ও ড্রাইভার-গার্ড দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেন৷ নয়া ব্যবস্থায় ইঞ্জিন বদল এবং গার্ড-ড্রাইভার পরিবর্তন হবে না৷ এতে সময় ও খরচ কমবে৷


কিন্ত্ত বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলির আপত্তি রেল ট্রানজিট দেওয়া নিয়ে৷ হাসিনার বক্তব্য, আমি শেখ মুজিবুরের মেয়ে৷ দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কোনও চুক্তি করিনি৷ গোটা বিশ্ব এখন নিজেদের দুয়ার খুলে দিচ্ছে৷ যে রেল পথ নিয়ে চুক্তি হয়েছে, দেশভাগের আগে সেই রুটে ট্রেন চলত৷ সেই রুটেই ট্রেন চালানোর কথা হয়েছে৷ বিনিময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভারতীয় রেলের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করবে৷ আধুনিক হবে ভারতীয় রেল৷

ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের কাছ থেকে এই সুবিধা দাবি করছিল৷ বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে গেলে কলকাতা-কোচবিহার যাতায়াতে কম সময় লাগবে৷ খরচও কম হবে৷ এরফলে ভুটানও উপকৃত হবে৷ কোচবিহার থেকে ট্রেন অদূরে ভুটান সীমান্তের ডালগাঁও পর্যন্ত যাবে৷ হাসিনার গত সফরেই কলকাতা-রাজশাহী ট্রেন এবং কলকাতা-চট্টগ্রাম বাস সার্ভিস চালুরও সিদ্ধান্ত হয়৷