• facebook
  • twitter
Saturday, 5 April, 2025

মেডিক্যাল বিল বিতর্কে ২৮ বছর আগে বহিষ্কৃত হন কংগ্রেস বিধায়ক

কংগ্রেস পরিষদীয় দলের অনুরোধ মেনে শ্যামাদাসের বিরুদ্ধে কোনও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ঘটনার পর তাঁকে আর সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। বর্তমানে তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।

ফাইল চিত্র

সম্প্রতি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। তাঁর মেডিক্যাল বিলের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, কাঞ্চন বিধানসভায় ৬ লক্ষ টাকার মেডিক্যাল বিল জমা দিয়েছেন। এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কাঞ্চনের এই ঘটনা সামনে আসার পরই ২৮ বছর আগের একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে প্রবীণ রাজনীতিবিদদের। ভুয়ো মেডিক্যাল বিলকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এক বিধায়ককে বহিষ্কার পর্যন্ত করা হয়েছিল। যদিও কাঞ্চনের হাসপাতালের বিলটি ভুয়ো নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।

২৮ বছর আগের বহিষ্কৃত বিধায়কের নাম শ্যামাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আসানসোল শিল্পাঞ্চলের কংগ্রেসের যুব নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৮০টির বেশি আসনে জয়লাভ করে কংগ্রেস। তৎকালীন হীরাপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বামফ্রন্ট সমর্থিত জনতা দলের প্রার্থী মমতাজ হোসেনকে হারিয়ে বিধানসভায় পা রাখেন শ্যামাদাস। সেই সময় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক ছিলেন আব্দুল মান্নান। তিনি জানান, ভোটে জেতার পর ধীরে ধীরে শ্যামাদাসের জীবনশৈলী ব্যাপকভাবে বদলে গিয়েছিল। তাঁর আধিজাত্যপূর্ণ জীবনযাপন সেই সময় সকলের চোখে লাগছিল। তাই নিজের দলের বিধায়করাই শ্যামাদাসকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

জানা যায়, সেই সময় কয়েকদিন অন্তর অন্তর বিধানসভায় মেডিক্যাল বিল জমা দিতেন বিধায়ক শ্যামাদাস। এই নিয়ে সচিবালয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। এক সময়ে ডাক্তার দেখানো ও ওষুধ কেনার বিরাট অঙ্কের বিল বিধানসভায় জমা দেন তিনি। এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অনেক জলঘোলা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তদন্তের নির্দেশ দেন তৎকালীন স্পিকার হাসিম আবদুল হালিম। তদন্তে উঠে আসে, শ্যামাদাস ভুয়ো বিল বিধানসভায় জমা দিয়েছেন। এরপরই তাঁর বিধায়কপদ খারিজ করে দেন স্পিকার। তবে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের অনুরোধ মেনে শ্যামাদাসের বিরুদ্ধে কোনও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ঘটনার পর তাঁকে আর সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। বর্তমানে তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।

কাঞ্চনের মেডিক্যাল বিল প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেন, কাঞ্চন শুধুমাত্র বিল নিয়ে বিধানসভায় খোঁজখবর নিয়েছেন। কিন্তু বিলটি জমা দেননি। যদিও বিধানসভার একটি সূত্র মারফত জানা যায়, মঙ্গলবারই বিলটি বিধানসভায় জমা পড়েছে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিল ছাড়পত্র দেওয়ার আগে আমি নিজে সব দেখি। এ ক্ষেত্রেও আমি নিজেই সব কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখব। তারপর যদি কোনও প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে কথা বলব।’

উল্লেখ্য, মূল বেতন ও একাধিক ভাতা মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়করা ১ লক্ষ ২১ হাজার টাকা করে পান। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তাঁদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। অর্থাৎ কোনও বিধায়ক হাসপাতালের বিল জমা দিলে তার খরচ বহন করে বিধানসভা।

News Hub