লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রাজ্য সরকারের সঙ্গে আরও জোরদার করেছে গেরুয়া শিবির। রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা মুকুল রায় জানান, সংখ্যালঘুদের গরুর সঙ্গে তুলনা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি শুধুমাত্র ভােটব্যাঙ্ক হিসাবেই সংখ্যালঘুদের গণ্য করেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাও জানান তিনি।
বিষয়টি ঠিক কি? নির্বাচনের ফলাফল ঘােষণার পর সংখ্যালঘুদের প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি ইফতার পার্টিতে যাবেন অন্যান্য বছরের মতাে। সবাইকে ইফতারে আমন্ত্রণও জানান তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যে গরু দুধ দেয় তার লাথও খাব। আর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায় সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযােগের আঙুল তুলে বলেন এই মন্তব্যের মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের গরুর সঙ্গে তুলনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি মুকুলের দাবি, নিজে খাওয়া দাওয়া করে ইফতারে যােগ দিতে যান মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও পুরাে বিষয়টিতে মুকুল রায়েরও সমালােচনা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, তৃণমূলে থাকাকালিন ইফতার পার্টির দায়িত্ব থাকত খােদ মুকুল রায়ের ওপর। বর্তমানে বিরােধী দলে যােগ দেওয়ায় কেন বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তিনি? এই নিয়েও এই বিজেপি নেতার সমালােচনা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
লােকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর বঙ্গে গেরুয়া ঝড়ের যে চাপা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল তা কার্যত স্পষ্ট হয়েছে। এই রাজ্যে শক্তিবৃদ্ধির পর থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের। এরই মধ্যে রাজ্য রাজনীতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুকুল রায় দাবি করেছেন, তৃণমূলে কংগ্রেস দলটি বিলুপ্তির পথে। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের বিশ্বাসযােগ্যতা ক্রমহ হারাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করার বিষয়টিতেও প্রশ্ন চিহ্ন তােলেন মুকুল রায়। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও ক্ষমতা ছাড়বেন না। কিন্তু শীঘ্রই বাংলার মানুষ তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন বলেও দাবি এই বিজেপি নেতার।
পাশাপাশি ঘাটালের কেশপুরের বেশ কিছু বুথে ছাপ্পা ভােট দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি মুকুলের। তাঁর কথায় কিছু কিছু বুথে ৯৯০ জন ভােটার এবং পড়েছে ৯৯০ টিই এবং সব ভােট গিয়েছে তৃণমূলে। পুরাে বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি এমনটাও জানান তিনি।
এদিকে লােকসভা ক্ষেত্রে কি ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, দলের তরফে তাঁকে যা দায়িত্ব দেওয়া হবে তা পালন করবেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্য শাসক দল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুকুল রায় জানান, তাঁর লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
মুখ্যমন্ত্রীর দিকে সরাসরি তােপ দেগে এই বিজেপি নেতার দাবি, লােকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ২০১৯, বিজেপি ফিনিস। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিকে নস্যাৎ করে ৪০ শতাংশের বেশি ভােট দিয়ে এই রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করেছে বলেও দাবি মুকুলের। তাঁর কথায়, শুধুমাত্র সিপিএম এর বিরােধীতা করার জন্যই জন্ম তৃণমূলের। বর্তমানে সিপিএম যেভাবে নিচিহ্ন হয়ে গেছে, তৃণমূলও রাজ্য রাজনীতির মানচিত্র থেকে মুছে যাবে বলে দাবি এই বিজেপি নেতার।