মিছিল-জনসভায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা, জোর ভার্চুয়ালে ৫ রাজ্যের ভোটের দিন ঘোষণা করল কমিশন

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল গোটা দেশ। দৈনিক সংক্রমণ দেড় লক্ষের দোরগোড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে পাঁচ রাজ্যের ভোটের ঘণ্টা বাজিয়ে দিল জতীয় নির্বাচন কমিশন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করল তারা।

মহামারী পরিস্থিতিতেও ৫ রাজ্যে ভোট করোনা নিয়ে কমিশনের সাফাই, “সংবিধান মেনে সময়মতো ভোট করাতে ঝধ্য কমিশন। যদিও ভোট প্রচার থেকে গণনা সর্বত্রই কোভিডবিধি মানা বাধ্যতামূলক বলে দাবি করেছে কমিশন।

৫ রাজ্যের নির্বাচন ভোট প্রক্রিয়ায় কোভিডবিধি নিয়ে বলার শুরুতেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রের উক্তি, ‘ইয়েকিন হো তো কোয়ি রাস্তা নিকলতা হ্যায়’ অর্থাৎ ‘ইচ্ছে থাকলেই। উপায় হয়’।


এদিন কমিশনের তরফে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভোট হবে ৭ দফায়। বাড়ছে ভোট কেন্দ্র প্রায় ১৬ শতাংশ বুথ বেড়েছে। ভোট কেন্দ্রে কমানো হল ভোটার সংখ্যা।

পাঁচ রাজ্যের ভোট (Photo:SNS)

এতদিন একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিতেন ১৫০০ ভোটার এবার ভোট কেন্দ্রে ভোট দেবেন সর্বোচ্চ ১২৫০ জন। করোনা আক্রাস্ত ৮০ ঊর্ধ্ব এবং বিশেষভাবে সক্ষম ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা।

রাজনৈতিক দলগুলিকে ডিজিটাল এবং ভার্চুয়াল প্রচারের অনুরোধ। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও রোড শো, পদযাত্রা সাইকেল বাই র্যালি করা যাবে না। করা যাবে না কোনও জনসভা।

১৫ তারিখের পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তার পর র্যালির অনুমতি দেওয়া হবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কোনও সভা বা পথসভা করা যাবে না বিজয় মিছিলও করা যাবে না জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে সর্বোচ্চ ২জন থাকতে পারবেন।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রচারের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে নিয়ে সর্বোচ্চ ৫জন থাকতে পারবেন। কোভিডবিধি ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা।

ভোটের ডিউটিতে থাকা কর্মীরা দু’টি করে ডোজ পারেন যাঁরা যাঁরা যোগ্য, তাঁরা প্রিকশন ডোজও পাবেন। সব রাজ্যেই টিকাকরণের গতি বাড়ানো হবে। ইতিমধ্যে গোয়ায় ৯৫ শতাংশ মানুষ জোড়া ভ্যাকসিন পেয়ে গিয়েছেন।

উত্তরাখণ্ড ৯৯.৯ শতাংশ প্রথম ডোজ এবং ৮৩ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৯০ শতাংশ মানুষ এবং ৫৩ শতাংশ পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ।

মণিপুর এবং পাঞ্জাবেও টিকাকরণের হার ভালো। এত নিয়মবিধির পর একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কোভিডবিধি মেনেই যখন ভোট হচ্ছে, তাহলে ভোটের দফা কমল কেন?

২০১৭ সালে ৮ দফগয় ভোট হয়েছিল। এমনকি, বাংলায়ও বিধানসভা ভোট হয়েছিল ৮ দফায়। তাহলে এবার কেন দফা কমানো হল, উঠছে প্রশ্ন।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত ওই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের ৪০৩টি আসনে ভোট হয়েছিল সাত দফায়।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মণিপুরের ৬০টি বিধানসভা আসনে দু’দফায় পাঞ্জাবের ১১৭ উত্তরাখণ্ডের ৭০ এবং গোয়ার ৪০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছিল এক দফাতেই। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের গণনা হয়েছিল ১১ মার্চ।

উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এবং গোয়ায় এবার দুর্গ রক্ষার লড়াই বিজেপির। এর মধ্যে তিন রাজ্যে গত ৫ বছর ক্ষমতায় রয়েছে পদ্মশিবির। গোয়ায় গত এক দশক।

যোগী আদিত্যনাথের সরকার লখনউয়ের কুর্সিতে ফিরতে পারে কি না, তার উপর আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতির গতিপ্রকৃতি অনেকাংশে নির্ভর করছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।

অন্যদিকে, সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের দলত্যাগের পর পাঞ্জাবে কঠিন লড়াইয়ের মুখে শাসক দল কংগ্রেস। আরব সাগর উপকূলের রাজ্য গোয়ায় এ বারই প্রথম সক্রিয় ভাবে লড়তে নেমেছে তৃণমূল।