বর্তমানে অশান্ত বাংলাদেশের পরিবেশ। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে। তারই মধ্যে বিএনপির নেতা এবং বাংলাদেশের প্রাক্তন সামরিক সদস্য বাংলা দখল করে নেবেন বলে দাবি করেছিলেন। তার প্রতিক্রিয়াতেই গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় সরাসরি বললেন, ‘আমরা বসে ললিপপ খাব না।’
বাংলাদেশে সম্প্রতি চলতে থাকা সংখ্যালঘু নিপীড়ন, হিন্দু নেতা চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার ইত্যাদি কারণে পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তাল। সেই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে এবং সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা আগেও ওপার বাংলায় শান্তিবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সমর্থনের হাত। কেন্দ্রীয় সরকারই এই ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে, এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ‘বাংলা দখল’-এর দাবিতে তিনি আর চুপ থাকতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে।
সোমবার বিধানসভায় বিএনপি-র ওই নেতার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, ‘বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড দখল করবেন। আপনার সেই ক্ষমতা নেই। আর আমরা বসে ললিপপ খাব এটা ভাববেন না।’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।’
বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের অবস্থান কী, তা নিয়ে জল্পনা চলছে দুই বাংলাতেই। বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত থাকায় ওপারের নিপীড়িত সংখ্যালঘু মানুষেরা এই বাংলায় এসে পড়লে ফের শরণার্থী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই ব্যাপারে মমতা জানান, ‘অনেকে এখানে আসতে চাইছেন ওপার থেকে। কিন্তু সেটা বিএসএফ দেখছে। আমরা এই নিয়ে মন্তব্য করব না।’
একই সঙ্গে, কোনও প্ররোচনা বা উস্কানিতে যেন কেউ পা না দেন, এমনটাও অনুরোধ মমতার। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারিকে কটাক্ষ করে এবং সংবাদমাধ্যমকে বিঁধে তাঁর বক্তব্য, ‘কয়েকটা মিডিয়া যা করছে তা যথাযথ নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে আপনাদের ব্যান করব। কিন্তু আবেদন করছি যথাযথ থাকুন। আর কিছু ফেক ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল করছে। রাজনীতি করবেন না।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ওই প্রাক্তন সামরিক সদস্য তথা বিএনপি নেতা জানিয়েছিলেন, ভারত চট্টগ্রাম দখল করতে চাইলে বাংলাদেশও বাংলা-বিহার-ওড়িশা দখল করবে। কিন্তু, চট্টগ্রাম নিয়ে এমন কোনও মন্তব্য ভারত সরকারের তরফে করা হয়নি। ফলে বিএনপি নেতার মন্তব্যকে হাস্যকর বলেই মনে করছেন একাংশ। অন্যপক্ষে ক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন অনেকেই।