রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালরাজ নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিআইডি দিয়ে দালালদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিলেন তিনি। মঙ্গলবার প্রশাসনিক রিভিউ মিটিং ও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা উপভােক্তাদের হাতে তুলে দিতে কালিয়াগঞ্জে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা দেড়টা নাগাদ কালিয়াগঞ্জ কলেজ মাঠে উপস্থিত হন তিনি।
সভায় বক্তব্য রাখার পর জেলা ও রাজ্যের একাধিক আধিকারিক, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, পুরসভার চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যদের নিয়ে প্রশাসনিক রিভিউ মিটিং করেন তিনি। জেলার সরকারি বিভিন্ন কাজের তদারকি করেন তিনি। কাজের গতিপ্রকৃতি সহ আইনশৃঙ্খলার নানা দিক উঠে আসে বৈঠকে। জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে কথা বলার সময় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালরাজ প্রসঙ্গে তােলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি রােগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সহ কলেজের আধিকরিকদের কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চান।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে। সরকার মানুষের সুবিধার কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ বিনামুল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। সেখানে হাসপাতালে দালালরাজ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তার সাথে কে বা কারা যুক্ত তা জানতে পুলিশ সুপারকে তিনি মেডিকেল কলেজে সিআইডি নিযুক্ত করার নির্দেশ দেন। দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শক্তির ব্যবস্থা করার নির্দেশও পুলিশ সুপারকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পশ্চিমবাংলায় সরবরাহ করার মতাে রায়গঞ্জে বড় আকারের পশু ও মাছের খাদ্য তৈরির কারখানা গড়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জের প্রশাসনিক রিভিউ মিটিংয়ে রায়গঞ্জের বন্ধ স্পিনিং মিলের জমিতে এই কারখানা গড়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর ও জেলা প্রশাসনকে তদরকি করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার কর্মসূচিতে যােগ দিতে মালদা থেকে হেলিকপ্টারে কালিয়াগঞ্জে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক রিভিউ মিটিংয়ে জেলার উন্নয়নের নানান দিক নিয়ে আলােচনা করেন তিনি। জেলায় ব্যাপক পরিমাণে ভুট্টা ফলন হওয়ায় পশুখাদ্য হাব তৈরির প্রস্তাব দেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১৮ লক্ষ টন ভুট্টা উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৮ লক্ষ টন ভুট্টা উৎপন্ন হয় উত্তর দিনাজপুর জেলায়। ভুট্টার ব্যাপক ফলনের কথা জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যজুড়ে পশুখাদ্যের অনেক জোগানের প্রয়ােজন। আমাদের কাছে জমি রয়েছে। স্পিনিং মিল বন্ধ রয়েছে। সেখানকার কর্মীদের অন্যত্র কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে মিলের জমি ফাঁকা। এই কারখানা সেখানে হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হবে জেলায়।’ উৎপন্ন পশু, মাছ ও পােলট্রি রাজ্যজুড়ে সরবরাহ করা যাবে। এই কারখানা তৈরির জন্য সরকার সমস্ত রকম সহযােগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।