‘বাম-রাম মিলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে’, আর জি করে হামলা নিয়ে মুখ খুললেন মমতা

আর জি করে হামলা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে এই হামলার ঘটনায় বিজেপি এবং সিপিএমকে দায়ী করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, আমি ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও দোষ দিচ্ছি না। বহিরাগত রাজনৈতিক লোকজন এই ঘটনার পিছনে রয়েছে। বাম-রাম মিলে একত্রিত হয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

আর জি কর মেডিক্যাল ও হাসপাতালের মৃত মহিলা ডাক্তারকে নিয়েও মুখ খোলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘটনাটা দুঃখজনক। সমস্ত তথ্য পেয়েছি। মৃতদেহের ছবি বা নাম বা মিডিয়া ট্রায়াল করা যায় না। মৃত্যুটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সমবেদনা রয়েছে। এটা সামাজিক ব্যাধি। এরা সমাজের শত্রু, এটাকে আমরা কোনওভাবেই সমর্থন করি না।

বিজেপি শাসিত রাজ্যের নারী নির্যাতনে ঘটনার প্রসঙ্গও এদিন তুলে ধরেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, উত্তর প্রদেশে একটা ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিন আগে মধ্যপ্রদেশেও একই ঘটনা ঘটেছে। হাথরস, বিলকিস বানো, উন্নাওয়ে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হল। এদের একটাই শাস্তি ফাঁসি। দোষীরা শাস্তি পাক, কিন্তু নিরপরাধীরা যেন শাস্তি না পায়।


পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনায় সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, আরজি করে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে। যথাসাধ্য তদন্ত করেছিল। মেরে ডিসিপ-র মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। ডিসিপি-কে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ও অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। আমি সারারাত জেগে ছিলাম। ভোর ৪টে পর্যন্ত জেগে ছিলাম।

প্রসঙ্গত, ‘রাত দখল’ কর্মসূচি চলাকালীন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আর জি করের লাগোয়া এলাকায় ‘রাত দখল’ কর্মসূচির একটি মিছিল চলছিল। অভিযোগ, সেই সময় আর জি করের জরুরি বিভাগের বাইরে তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী। গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়।

ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), ওষুধের স্টোররুমে ভাঙচুর চলানো হয়। আর জি করের পুলিশ ফাঁড়ি এবং আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মঞ্চেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

ঘটনাস্থলে কিছু পুলিশকর্মী উপস্থিত থাকলেও প্রাথমিকভাবে তারা কিছু করে উঠতে পারেননি। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। নামানো হয় র‌্যাফও। ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের একাধিক গাড়ি। দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া ইটে জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী।

এই হামলা ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য ঘিরে তৃণমূল মুখপাত্র ঋজু দত্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই এবং ছাত্র সংগঠন এসএফআই! এই দুই সংগঠনকে তিনি ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ বলেও আক্রমণ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বাংলাকে বাংলাদেশ বানানোর জঘন্য চেষ্টা চলছে।

এদিকে এই হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হামলার পরপরই কলকাতা পুলিশের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করা হয়। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা চায় পুলিশ।