• facebook
  • twitter
Sunday, 27 April, 2025

ধর্ম বলতে বুঝি ভক্তি, শান্তি, মানবতা, ঐক্য: কালীঘাট স্কাইওয়াক উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী

সংশোধনী ওয়াকফ আইন নিয়ে রাজ্যের একাধিক এলাকায় অশান্তির আবহে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সংশোধনী ওয়াকফ আইন নিয়ে রাজ্যের একাধিক এলাকায় অশান্তির আবহে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সন্ধ্যায় কালীঘাটের স্কাইওয়াক সহ মোট তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানেই মমতা বলেছেন, ‘ধর্ম নিয়ে অধার্মিক খেলা খেলতে নেই। মানুষকে ভালোবাসার থেকে বড় ধর্ম আর কিছু হতে পারে না। কীসের দাঙ্গা, কীসের অশান্তি? মানুষকে ভালোবাসলে সবকিছু জয় করা যায়।’ পাশাপাশি কাউকে কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে মাথা ঠান্ডা রাখারও বার্তা দিয়েছেন মমতা।

সোমবার সন্ধ্যায় রিমোটের সাহায্যে কালীঘাটের স্কাইওয়াকের পাশাপাশি নবরূপে সুসজ্জিত কালীঘাট মন্দির ও মন্দিরপ্রাঙ্গন এবং রিফিউজি হকার্স কর্নারের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন উদ্বোধনী মঞ্চে মমতার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, মালা রায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, শিল্পপতি সৃঞ্জয় বোস, নির্মল ঘোষ, হর্ষ নেওটিয়া, দেবাশিস কুমার প্রমুখ। এছাড়াও দেব, জিৎ গাঙ্গুলি, জুন মালিয়া, অদিতি মুন্সিরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে একযোগে তারাপীঠ, তারকেশ্বর ও ফুরফুরা শরিফের উন্নয়নের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

গত কয়েকদিন ধরে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে উত্তপ্ত রাজ্যের কয়েকটি এলাকা। এই আবহে ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন মমতা। প্ররোচনা দেওয়ার জন্য নাম না করে বিজেপিকে নিশানা করেছেন তিনি। কারও উপর কোনও আঘাত এলে, কেউ নির্যাতিত বা বঞ্চিত হলে, তিনি যে ধর্মের মানুষই হোন না কেন, সকলের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘ধর্ম বলতে আমরা বুঝি ভক্তি, স্নেহ, মানবতা, শান্তি, সৌহার্দ্য, সংস্কৃতি, সাদৃশ্য এবং ঐক্য।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। তবে কেউ যেন আইন হাতে তুলে না নেন। আইনের জন্য তো আইনের রক্ষক আছে। আইনের ভক্ষকের দরকার নেই। কোনও প্ররোচনায় পা না দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘বাংলার মাটি শান্তির মাটি, সোনার চেয়েও খাঁটি’।

কালীঘাটে নতুন স্কাইওয়াক তৈরির কারণে অনেক হকারদের কাজ চলে যেতে পারত বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে সেই সময় বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এক বছরের জন্য হাজরা পার্কে হকার্স কর্নার বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার উদ্বোধন হওয়া নবনির্মিত হকার্স রিফিউজি কর্নারে নিজেদের ব্যবসা আবার শুরু করতে পারবেন হকাররা।

দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণি স্কাইওয়াক উদ্বোধনের দিনই কালীঘাট স্কাইওয়াক তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৮ সালে এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। প্রায় ৯০ কোটি টাকা খরচে ৫০০ মিটার দীর্ঘ এবং সাড়ে ১০ মিটার চওড়া এই স্কাইওয়াকটি তৈরি হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার পর নতুন বছর শুরুর আগের দিন মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে স্কাইওয়াকটির উদ্বোধন হয়েছে।