সোমবার লকডাউনের বন্দিদশা মুক্তির বার্তা পেতে না পেতেই ঘর থেকে রাস্তায় নেমেছেন বহু মানুষ। যদিও বেসরকারি পবিহণ এখনও চালু হয়নি, তা সত্ত্বেও সোমবার দু’চাকা কিংবা চার চাকার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
সেইসঙ্গে সরকারি পরিবহণের জন্য লম্বা লাইন লকডাউনে রেশনের জন্য লাইনকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ফলে সোমবার আনলকডাউনের প্রথম দিন শহর যানজটে প্রায় লকড হয়ে পড়েছিল। প্রশস্ত বি টি রোডই হোক কিংবা বাইপাশ— সর্বত্র এক চিত্র চোখে পড়েছে।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে যানজটে অবরুদ্ধ বি টি রোড দেখে বোঝার উপায় ছিল না, লকডাউন পর্ব এখনও উঠে যায়নি। এমনিতেই টালা সেতু যান চলাচলের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বি টি রোডে গাড়ি যাতায়াত যথেষ্ট কষ্টকর ছিল।
লকডাউন পর্বে আর জি কর সেতু স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ত্রুটি ধরা পড়ে। ওই সেতুর ভার কমানোর জন্য সেতুর ওপরে থাকা অ্যাসফাল্টের স্তর চেঁছে ফেলা হচ্ছিল। ফলে পাইকপাড়া বা চিড়িয়ামোড় ধরে আর জি কর রোড হয়ে শ্যামবাজার আসার পথ বন্ধ।
সকালে নিয়মানুযায়ী লকগেট বন্ধ থাকায় চিৎপুর লেভেল ক্রসিং ধরে বি টি রোডের গাড়িগুলিকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের রাস্তা ধরতে হয়েছে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য। শোভাবাজার মেট্রো পর্যন্ত উত্তর এবং দক্ষিণমুখী দুই রাস্তাতেই তীব্র যানজট হতে দেখা যায়। পরে এদিন দিনভর দীর্ঘ সময় ধরে বি টি রোড অবরুদ্ধ হয়ে থাকে।
একইভাবে যারা বাইপাস ধরে এসেছেন এদিন তাঁদেরও দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে। আম্বেদকর সেতু থেকে শুরু হওয়া যানজটের কারণে কামালগাজি পর্যন্ত রাস্তা প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল। প্রচুর গাড়ির চাপে বেলেঘাটা মেন রোড থেকে শুরু করে পূর্ব এবং দক্ষিণ কলকাতার বহু রাস্তা অরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল।
পুলিশ কর্তাদের দাবি, বাস বা গণপরিবহণ কম থাকায় ছোট গাড়ির সংখ্যা খুব বেড়ে গিয়েছে। সঙ্গে বেড়েছে বাইকের সংখ্যাও। তাছাড়া বহু জায়গায় আম্ফানে উপড়ে যাওয়া গাছের ডালপালা জড়ো হয়ে থাকায় রাস্তার পরিসর ছোট হয়ে গিয়েছে।
তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝড়ে বিকল হয়ে যাওয়া বেশ কিছু সিগন্যাল এবং সিসি ক্যামেরা। ফলে অনেক জায়গাতেই কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারিতে বিঘ্ন ঘটেছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় ট্রাফিক পুলিশও এদিন রাস্তায় ছিল না। ফলে এদিন সোমবার শহরের রাস্তা দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যানজটের কবলে।