ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংকে তলক করল সিআইডি। ১২ নভেম্বর সিআইডি সদর দপ্তর ভবানী ভবনে তলব করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার এই বিজেপি নেতাকে। সূত্রের খবর, ভাটপাড়া পুরসভার সাড়ে চার কোটি টাকার দুর্নীতি মামলায় তলব করা হয়েছে তাঁকে। ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬ কেন্দ্রে উপনির্বাচন, তার মধ্যে রয়েছে অর্জুনের খাসতালুক নৈহাটি। ভোটের ঠিক আগের দিন সিআইডি অর্জুনকে তলব করায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এ নিয়ে সরব হয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সালের শুরু পর্যন্ত ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন অর্জুন সিং। সেই সময় ওই পুরসভাটি তৃণমূলের দখলে ছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপিতে যোগদান অর্জুন। গেরুয়া শিবিরের টিকিটে জিতেও যান ব্যারাকপুরে। অর্জুনের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ভাটপাড়া পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। নালা সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করা হয় বলে অভিযোগ। এই মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এর আগে ২০২১ সালেও অর্জুন সিংকে তলব করা হয়েছিল কিন্তু সেবার তিনি হাজিরা দেননি। তারপর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
অভিযোগ, অর্জুন ভাটপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন নালা সংস্কারের নামে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। সেই টেন্ডার বেআইনিভাবে অর্জুন ঘনিষ্ঠ একটি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কাজের জন্য টাকা দেওয়া হলেও নালা সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ উঠে। এই আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলার তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি। ২০২০ সালে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অর্জুনের নাম প্রকাশ্যে আসে। প্রাথমিকভাবে ব্যারাকপুর সিটি পুলিশ তদন্ত চালালেও পরে সিআইডির হাতে তদন্তভার যায়। প্রশ্ন উঠছে, ৪ বছর পর বেছে বেছে উপনির্বাচনের আগের দিনই কেন অর্জুনকে তলব করা হল?
সূত্রের খবর, অর্জুন সিংকে ১২ নভেম্বর বেশ কিছু নথিপত্র নিয়ে ভবানী ভবনে হাজির হতে বলা হয়েছে। এদিকে অর্জুনকে তলবের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, এই তলবের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। নৈহাটি বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে তৃণমূল ভয় পেয়েছে, তাই পরিকল্পিতভাবে ভোটে ঠিক আগের দিন অর্জুনকে ডাকা হয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে, শুভেন্দু লেখেন, নোটিসে ৫ নভেম্বরের সই রয়েছে অথচ সেই নোটিস অর্জুনের কাছে পৌঁছে গেল তার আগের দিন অর্থাৎ ৪ নভেম্বর। সিআইডির বিরুদ্ধে তারা আদালতে যাবেন বলে হুশিয়ারি দেন নন্দীগ্রামে বিধায়ক।
এদিকে এই তলব প্রসঙ্গে অর্জুন সিং বলেন, উপনির্বাচনের আগের দিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে ডাকা হয়েছে। তৃণমূলে থাকলেই গুড বয় আর বিজেপি করলেই ব্যাড বয়। জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম অর্জুন সিংকে কড়া আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, ভাটপাড়া নৈহাটি কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কে বিপুল পরিমাণ আর্থিক তছরূপ হয়েছে। ২০২০ সালে এই সংক্রান্ত অভিযোগ আমিই দায়ের করি। ভুয়ো ওয়ার্ক অর্ডার বানিয়ে কো-অপারেটিভ থেকে বিপুল টাকার লোন নেওয়া হয়। প্রাক্তন সাংসদের অনুগামীদের নামে লোন নেওয়া হয়েছিল। এর আগে ওর ভাইপো পাপ্পু সিং এই অভিযোগে ৬ মাস জেল খাটে, এবার ওনাকেও জেল খাটতে হবে।