• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

কুখ্যাত গ্যাংস্টার  সুবোধকে বিহারের জেল থেকে ধরে আনল সিআইডি

নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে আসানসোলের রানিগঞ্জে ডাকাতি ও গুলিকাণ্ডের তদন্তে সেই সুবোধ সিংহকে ধরে আনল সিআইডি। রাজ্যে সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া প্রায় সব ধরনেরই অপরাধের ঘটনাতেই তাঁর নাম জড়িয়েছে। বিহারের জেলে বসেই যে গ্যাংস্টার যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছেন, তদন্তে তা বার বার উঠে এলেও তাঁকে কিছুতেই নাগালে পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। দীর্ঘ দিন ধরে বিহারের বেউর জেলে বন্দি

নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে আসানসোলের রানিগঞ্জে ডাকাতি ও গুলিকাণ্ডের তদন্তে সেই সুবোধ সিংহকে ধরে আনল সিআইডি। রাজ্যে সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া প্রায় সব ধরনেরই অপরাধের ঘটনাতেই তাঁর নাম জড়িয়েছে। বিহারের জেলে বসেই যে গ্যাংস্টার যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছেন, তদন্তে তা বার বার উঠে এলেও তাঁকে কিছুতেই নাগালে পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। দীর্ঘ দিন ধরে বিহারের বেউর জেলে বন্দি ছিলেন সুবোধ। রবিবার তাঁকে আসানসোল আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল পুলিশ। কিন্তু বিচারক আপাতত সুবোধের এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার তাঁকে ফের আদালতে হাজির করানো হবে। আদালতে হাজির করানোর সময় সুবোধ অবশ্য বলেন, ‘‘আমি ছ’বছর ধরে জেলবন্দি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। বাংলার পুলিশ অপরাধ আটকাতে পারছে না। তাই আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছে এখন!’’
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই রানিগঞ্জ ও হাওড়ার ডোমজুড়ে সোনার দোকানে ডাকাতি হয়। দু’টি ঘটনাতেই নাম জড়ায় সুবোধের। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে উঠে এসেছে, রানিগঞ্জে ডাকাতির ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সোনু সিংহ। তিনি সুবোধের দলেরই সদস্য। সোনু-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। অন্য দিকে, ডোমজুড়ের ঘটনায় কেউ গ্রেফতার না হলেও তদন্তকারীদের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে বিকাশ ঝা নামে বিহারের সমস্তিপুরের এক দুষ্কৃতীদল। সুবোধই যার মাথায় রয়েছেন। সিআইডির তদন্তকারীদের দাবি, সুবোধকে জেরা করলে তাঁর দল সম্পর্কে আরও বিশদে ধারণা তৈরি হবে। পাশাপাশি সোনার দোকানে বা স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় ডাকাতির তদন্তেরও কিনারা করা সম্ভব হবে।এর আগে ২০২২ সালে রানিগঞ্জে একটি গয়নার দোকানের মালিকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ডাকাত দল। পুলিশ সেখানে পৌঁছে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে চলে গুলির লড়াই। ঘটনাস্থল থেকে প্রথমে সোনু যাদব, রসুল শেখ ও মনিন্দর সিংহ নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের জেরা করে নেপাল সীমান্ত থেকে ধরা হয় ওয়াসিমুল হক আনসারি নামে আর এক জনকে।
এরপরেই সুবোধের নাম উঠে আসে তদন্তে। তখন থেকেই তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করছিল সিআইডি। আবার কয়েক দিন আগে বেলঘরিয়ার ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাতেও সুবোধের নাম জড়িয়েছিল। অজয় ছাড়াও ব্যারাকপুরের বাসিন্দা আর এক ব্যবসায়ী তাপস ভগতের কাছেও যে হুমকি ফোন এসেছিল বলে অভিযোগ, সেটিও সুবোধ করেছিলেন কি না, তা পরীক্ষা করে দেখছে ব্যারাকপুরের পুলিশ। চলতি মাসের গোড়ায় বেউর জেলে গিয়ে সুবোধকে জেরা করে এসেছিলেন তদন্তকারীরা।পুলিশ সূত্রে খবর, বেলঘরিয়ার ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড-সহ একাধিক রাজ্যে সুবোধের দল কাজ করে। মূলত বিভিন্ন স্বর্ণ বিপণি এবং স্বর্ণ ঋণ দানকারী সংস্থায় তারা লুটপাট চালায়।
গত কয়েক বছরে এমন ১১টি অভিযোগ উঠেছে সুবোধ ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। তাতে প্রায় ২০০ কেজিরও বেশি সোনা লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আসানসোলে একটি স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় ডাকাতি ও ২০২০-এ ব্যারাকপুরে মণীশ শুক্লকে খুনের ঘটনাতেও সুবোধ জড়িত ছিলেন বলে দাবি। দু’টি ঘটনাতেই আদালতের নির্দেশে সুবোধকে জেলে গিয়ে জেরা করতে চাইলেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল তদন্তকারীদের। মণীশ শুক্লকে খুনের ঘটনায় এ রাজ্যে সুবোধকে আনাতে আদালতের পরোয়ানা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। অবশেষে তাঁকে হাতে পাওয়ায় তদন্তকারীদের অনুমান, ঠিক মতো জেরা করা গেলেই সব ক’টি ঘটনার তদন্ত শেষ করা সম্ভব হবে।