আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর কেটেছে ১ মাস। গত এক মাস ধরে এই ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন রাজ্যের সকল শ্রেণির নাগরিক। রাস্তায় নেমেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও। তবে এবার নাগরিকদের পুজো আর উৎসবে ফেরার অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের অনেক দুর্গাপুজো কমিটি রাজ্য সরকারের দেওয়া অনুদান ফেরানোর কথা ঘোষণা করেছে। এই নিয়ে এদিন রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মমতা। তিনি জানান, যে সব পুজো কমিটি সরকারি অনুদান নেবে না তাদের বাদ দিয়ে নতুন পুজো কমিটিদের অনুদান দেওয়া হবে।
রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গাপুজোর অনুদান ফেরানো নিয়ে মমতা বলেন, ‘যদি কেউ না নিতে চান, ঠিক আছে। নতুন যে লিস্ট এসেছে, বা আবেদন করেছেন, তাদের দিয়ে দেবেন। নতুন অনেকের আবেদন আমাদের কাছে এসে পড়ে আছে। সবাইকে হয়তো একসঙ্গে দিতে পারব না। কারণ, টাকাটা বেড়ে অনেকখানি হয়ে গিয়েছে। ৪৫০ কোটি খরচ হয় ক্লাবগুলিকে দেওয়ার জন্য। সেই টাকা মঙ্গলবার থেকে দেওয়া শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মুদিয়ালি আমরা কজন পুজো কমিটি, নেতাজিনগর বাস্তুহারা সমিতি ছাড়াও হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলার কয়েকটি পুজো কমিটি রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গাপুজোর অনুদান প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেছে। অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করছে বেহালার সবেদা বাগান ক্লাবও। ইতিমধ্যেই বেহালা থানাকে মেল করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন এই পুজোর উদ্যোক্তারা। অপরদিকে বাদল পল্লি মহিলা দুর্গোৎসব কমিটি, বাঁশদ্রোণী কালীতলা পার্ক নাগরিক সেবা সমিতি এবং নিবেদিকা পার্ক অ্যাসোসিয়েশনের মতো পুজো কমিটিগুলো সরকারি অনুদান পেতে নতুন করে আবেদন করেছেন।
দুর্গাপুজোর জন্য এখন থেকেই পুলিশকে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা আটকাতে পদক্ষেপ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মমতার কথায়, ‘এই পুজোকে কেন্দ্র করে অনেকের রুজিরোজগার হয়। অনেক বিদেশি অতিথিরা আসেন। সারা দেশ থেকে মানুষ আসেন। তাঁদের যেন কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সেটাও দেখতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত প্রায় ১ মাস ধরে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে মানুষ। রাজ্য ও দেশ ছাড়িয়ে এনিয়ে বিদেশের মাটিতেও প্রতিবাদের আগুন জ্বলেছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকদের পুজোয় ফেরার অনুরোধ করলেন। মমতা এদিন বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে আপনারা রাস্তায় থাকলে অনেক মানুষের সমস্যা হয়। এলাকায় অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন। আলো লাগলে তাঁদের ঘুমের সমস্যা হয়। রাত ১০টার পর মাইক বাজানো নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিয়মও রয়েছে । তা সত্ত্বেও আমরা ছেড়ে দিয়েছি। এক মাস তো হয়ে গেল। আমি অনুরোধ করব আপনারা পুজোতে ফিরে আসুন, উৎসবে ফিরে আসুন। সিবিআইকে অনুরোধ করব, তাড়াতাড়ি বিচারের ব্যবস্থা করুন।’