৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রতীকী চিত্র

দু-একদিনের মধ্যেই দানায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না-নেওয়া হলেও আজ রবিবার সেখানে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদি সেটাও না-হয়, তাহলে আগামী কাল সোমবারের মধ্যে সেখানে যেতে পারেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। নবান্নের তরফ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিল্ড সার্ভের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবহাওয়ার উন্নতি হলে, শনিবারই আকাশ পথে দূর্গত এলাকাগুলোতে পৌঁছে যেতে পারেন তিনি। আর যদি কোনও কারণে তা না-হয়, তাহলে রবিবারে কিম্বা সোমবারেও যেতে পারেন তিনি। নবান্নের তরফ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিল্ড সার্ভের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে রাতভর নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগের মোকাবিলায় জেলায় জেলায় থাকা প্রশাসনের টিমের কাজকর্ম নবান্ন থেকে নিজে মনিটরিং করেছেন তিনি।


এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘উনি এরকমই। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে পারেন!’ ওই কর্তা আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলেও আমরা জানতাম না-যে, উনি সারা রাত নবান্নে থাকবেন। যেভাবে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে আবার বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে, দুর্গত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আমরা প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরে রেখেছি।’

আরও জানা গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দানার দাপটে দুই মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। যেহেতু দানার দাপটে দুই মেদিনীপুর এবং এবং দুই ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ওপর ভারী বৃষ্টির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ফের বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির সার্ভে করার জন্য ডেডলাইনও বেঁধে দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান,আগামীকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা ফিল্ড সার্ভে করে তারপর ক্ষয়ক্ষতির নির্দিষ্ট পরিমাণ জানা সম্ভব হবে। আগের বন্যা এবং এখনকার এই সাইক্লোন দুটো নিয়েই এই সার্ভে করা হবে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বারবার ত্রাণ শিবিরে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দ্রুত দুর্যোগ কেটে যাবে। তবে সাধারণ মানুষের কাছে সবরকম পরিষেবা পৌঁছে দিতে যেন দেরি না হয়।’

এছাড়াও দানার প্রভাবে এখনও কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টা দুই মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টি হবে হাওড়া, হুগলিতেও। ফলে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারেও জেলা ও ব্লক প্রশাসনকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, পুজোর মুখে অতি বৃষ্টিতে বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। সে সময় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে আচমকা হাওড়়া, হুগলি, মেদিনীপুরের দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার ঘূর্ণিঝড় দানা আঘাত হেনেছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশায়। সেখানে যা ক্ষতি হওয়ার তো হয়েছেই, ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এ রাজ্যও। ঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। এবার সেই সমস্ত দুর্গত এলাকায় পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।