বাংলার যাত্রা একদিন বিশ্বের দরবারেও প্রদর্শিত হবে, আশাবাদী ‘যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাস। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা অ্যাকাডেমি এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত ৩৫ দিন ব্যাপী ২৯ তম যাত্রা উৎসব ‘বাংলার জীবনযাত্রা’র শুভ উদ্বোধন করে এমনই আশা প্রকাশ করলেন তিনি। রাজ্যের এই মন্ত্রীর মতে, বাম আমলে বাংলার ঐতিহ্যবাহী যাত্রা শিল্প ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে নবজাগরণের পথে হাঁটছে এই শিল্প। তাঁর কথায়, ‘আগে বছরে যাত্রা হত ৩৫-৪০টা। সেই সংখ্যা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০-র অধিক। যাঁরা আগে নিজেদের সংস্কৃতিপ্রেমী বলে জাহির করতেন তাঁরা এই যাত্রা শিল্পের উন্নয়নে এগিয়ে আসেননি।
২০১১-র আগে মাত্র ৯০ জন যাত্রা শিল্পী ৬ হাজার টাকা অনুদান পেতেন। এখন মুখ্যমন্ত্রী ৮১৫ জন যাত্রা শিল্পীকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেন। যাত্রা শিল্পের প্রচার এবং প্রসারে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বিশেষ অ্যাওয়ার্ড চালু করেছেন, এখনও পর্যন্ত যা পেয়েছেন ১১৭ জন শিল্পী।’ এদিন তিনি নাম না করে বাম সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন। অরূপ আরও জানান, বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় যাত্রা শিল্পীরা বাংলার যেকোনও প্রান্তে মাত্র স্বল্প অর্থের বিনিময়ে যাত্রা করতে পারছেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন মঞ্চ থেকে জানান, ২০১৩ সাল থেকে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন। এবার তিনি নিজে না আসতে পারলেও শুভেচ্ছা-বার্তা পাঠিয়ে যাত্রানুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেছেন। বারাসতের কাছারি ময়দানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী অরূপ এবং ইন্দ্রনীল ছাড়াও অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, রথীন ঘোষ, ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী, বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, বারাসতের পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখরিয়া, জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী, মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ, বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখার্জি, বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত-সহ অন্যান্য ব্যক্তিরা।
মন্ত্রী অরূপের কথায়, ‘যাত্রা এবং কাছারি ময়দান একে অপরের পরিপূরক। ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী যাত্রানুষ্ঠানের সূচনা করেছিলেন এই ময়দান থেকেই।’ শুক্রবার ‘যাত্রা হল শুরু’ গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারী কাছারি ময়দানে, ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্রসদনে এবং ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত বাগবাজারের ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রামঞ্চে এই যাত্রাপালা চলবে।