সােমবার খাতড়ার সিধু কানু স্টেডিয়ামে সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি সেরে মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরের রবীন্দ্রভবনে আয়ােজিত প্রশাসনিক পর্যালেচনা বৈঠকে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় সরকারি প্রকল্প গুলির হাল হকিকত খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়ােজনীয় নির্দেশও দেন তিনি।
সােমবার সিধু কানু স্টেডিয়াম থেকে তিনি বিরসা মুন্ডার জন্মদিনকে সরকারি ছুটি হিসাবে ঘােষণা করেন। এদিন প্রশাসনিক পর্যালােচনা বৈঠকে পঞ্চানন বর্মার জন্মদিনকেও সরকারি ছুটি হিসাবে ঘােষনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের বাউরি বাগদি ও মতুয়াদের কথা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক বাের্ড গঠনের সিদ্ধান্তও এদিন ঘােষনা করেন। রাজ্য বাউরি সাংস্কৃতিক বাের্ডের সদর দফতর বাকুড়াতেই হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ওই সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫ কোটি টাকাও তিনি বরাদ্দ করেন।
এদিকে ঠাকুর নগরে মতুয়া এবং বর্ধমানে বাগদি সমাজ সাংস্কৃতিক বাের্ডের সদর দফতর করা হবে বলে এদিন রবীন্দ্র ভবনের প্রশাসনিক মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘােষণা করেন। বাগদি সমাজ সাংস্কৃতিক বাের্ডের জন্য ৫ কোটি এবং মতুয়া বাের্ডের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথাও তিনি ঘােষণা করেন। জেলায় মাটির সৃষ্টি প্রকল্প রূপায়নের লক্ষ্যে ১ হাজার ৭১৬ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।
পথশ্রী অভিযানে রাজ্যে মােট ৭০ হাজার রাস্তা হয়েছে। গত ৮ বছরে মােট আড়াই লক্ষ নতুন রাস্তা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন। তবে মালবাহী লরি চলাচল করায় গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটের দফারফার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজর এড়ায়নি। ওইসব রাস্তায় মালবাহী লরি চলাচল নিয়ন্ত্রন করার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে কঠোর হওয়ারও নির্দেশ দেন। ক্ষমতায় আসার আগে জেলার ১৫ শতাংশ মানুষ নলবাহিত পানীয় জলের সুবিধা পেতেন। বর্তমানে তা ৭৫ শতাংশে পৌঁছেছে। আগামী ২ বছরে তাঁর সরকার রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে জলবাহিত পানীয় জলের পৌঁছে দেবে বলে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন।
এদিন বৈঠকে উপস্থিত জেলার প্রায় সমস্ত বিধায়কদের কাছ থেকে বিভিন্ন সমস্যা ও দাবির কথা শােনেন। সেচ কৃষি শিক্ষা উদ্যানপালন সহ জেলার সার্বিক উন্নয়নের সহযােগী সবকটি প্রকল্পের হাল হকিকত সম্পর্কেও তিনি অবহিত হন। তবে এদিন সভা চলাকালীন মাঝখানে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আর কিছু চাই না। সবসময় দাও আর দাও। টাকা কোথা থেকে আসবে? বাঁকুড়ার জন্য অনেক করেছি। সামনে ভােট আসছে। আগে ভালাে করে ভােট করাও। তারপর বাকি সব হবে।’ দলের নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানাের পরামর্শ দেন। সমস্যার সমাধান করতে না পারলে মানুষের সমস্যার কথাগুলাে অন্তত শুনুন।