বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ‘হুমকি সংস্কৃতি’এবং ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র প্রভাব সম্পর্কিত মামলা। ‘একটি অভিযোগেরও সত্যতা থাকলে সেটা অত্যন্ত গুরুতর’ , বলে জানান প্রধান বিচারপতি। জনস্বার্থ মামলায় প্রশ্নপত্র বিক্রি, বদলি সহ একাধিক অভিযোগ আছে। ‘একটি অভিযোগেরও সত্যতা থাকলে, সেটা অত্যন্ত গুরুতর।’ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ওঠা ‘হুমকি সংস্কৃতি’এবং ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ র প্রভাব নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বললেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএম শিবজ্ঞানম।
মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র বিক্রি, বদলি, টুকল-সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের বিষয়গুলো উল্লেখ করে চিকিৎসক অর্চিস্মান ভট্টাচার্য ও এক সমাজকর্মী জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি চলে। এদিন শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘ এই মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের উপস্থিত থাকা প্রয়োজন’। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের হলফনামা তলব করেন প্রধান বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন,’উত্তরবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজের এক প্রিন্সিপালের রিপোর্টেও এই ‘হুমকি সংস্কৃতি’র উল্লেখ রয়েছে। চারজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করা হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।’ রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলোর পরিস্থিতি বলতে গিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন খোদ প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘একজন মহিলা চিকিৎসক বলছেন, যে তাঁকে তাঁর বাবা নিরাপত্তার জন্য ছুরি দিয়েছেন! আরেক মহিলা চিকিৎসক বলছেন, যে তিনি পিপার স্প্রে সঙ্গে নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যান।’ গোটা বিষয়টিতে বিস্মিত প্রধান বিচারপতি। আদালত মনে করছে , ‘হাসপাতালের ৬০ শতাংশ মহিলা চিকিৎসক বিভিন্ন ভাবে দুর্ব্যবহারের শিকার হন’। আগামী ২১ নভেম্বর পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের পর রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলোতে হুমকি সংস্কৃতি’র অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। প্রভাবশালী একাধিক ক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়ে, চাপ তৈরি করে বেনিয়ম করতেন বলে অভিযোগ ওঠে। সরব হয় বিরোধী চিকিৎসক সংগঠনগুলোও। উল্লেখ্য, হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন খোদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূর। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন। গত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে বিস্তর সওয়াল জবাবও হয়। এবার হাইকোর্টও ভীষণভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করল। আগামী ২১ শে নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।