কয়লা পাচার মামলায় হল না চার্জ গঠন, আসানসোল সিবিআই আদালতে আরো ৫ জনের জামিন

সীতারাম মুখোপাধ্যায়, আসানসোল: গোটা দেশ জুড়ে শোরগোল ফেলা কয়লা পাচার মামলায় বুধবার চার্জ গঠন বা ফ্রেম করার কথা থাকলেও, তা শেষ পর্যন্ত হলো না। তার কারণ হল দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী নাম থাকা দু’জন এ্যাবসকন্ড বা ফেরার থাকা। এদিন ঘন্টা খানেকের মতো সওয়াল-জবাব শেষে আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দেন যে, আগামী ৯ আগষ্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সেদিন সিবিআইকে এই মামলার চার্জ গঠন বা ফ্রেম করার নির্দেশ বিচারক দিয়েছেন। এর পাশাপাশি যে দুজন ফেরার রয়েছে তাদেরকে ঐ দিন হাজির থাকার জন্য নোটিশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যে দুজন ফেরার রয়েছে তারা হলো কয়লা কারবারি তারকেশ্বর মন্ডল ও মহঃ সাকিল। এই দুজনের নাম সিবিআইয়ের পেশ করা দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে আছে।

প্রসঙ্গতঃ, তবে এই মামলায় যারা গ্রেফতার হওয়ার পরে জামিনে আছেন, তাদের আইনজীবীরা অবশ্য এদিন যে চার্জ গঠন করা সম্ভব হবেনা বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।

অন্যদিকে, এদিন সম্প্রতি এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৫ জন আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন। এই পাঁচজন হলেন নরেশ কুমার সাহা ( জিএম), অশ্বিনী কুমার যাদব, অমিত কুমার ধর ( অবসরপ্রাপ্ত জিএম) , বাপি ওরফে সীমন্ত ঠাকুর ও বিদ্যাসাগর দাস। এই ৫ জনের নাম দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে আছে। তারা এতদিন আসানসোল জেলে ছিলেন। এদের হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন আইনজীবী শেখর কুন্ডু ও সোমনাথ চট্টরাজ। তারা আবেদনে বলেন, তাদের মক্কেলরা যাতে দেশের যে কোন জায়গায় যেতে পারে তার ব্যবস্থা করা হোক। বর্তমানে যারা জামিনে আছেন তাদের শর্ত শিথিল করা হোক। সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার ৫ জনের জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এখনো এই মামলার তদন্ত চলছে ও এরা যথেষ্ট প্রভাবশালী। এই প্রসঙ্গে বিচারক জানতে যে, এর আগে কি কেউ প্রভাব খাটিয়েছেন? তার জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী নীরব থাকেন। শেষ পর্যন্ত বিচারক ৫ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।


এদিকে ঠিক দুদিন আগে সোমবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এই মামলার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী বা অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে নতুন করে আরো ৭ জনের নাম আছে বলে সিবিআই ও আদালত সূত্রে জানা গেছে। যার মধ্যে ৫ জন এমন রয়েছেন যাদেরকে সদ্য গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ২ জনকে ফেরার বলা হয়েছে। তাতে এই ৭ জনের কি ভূমিকা তা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিনের শুনানি শেষে আইনজীবী শেখর কুন্ডু, সোমনাথ চট্টরাজ ও অভিষেক মুখোপাধ্যায় বলেন, এই মামলায় সিবিআই যে দুটি চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতে সবমিলিয়ে ৫০ জনের নাম আছে। দুজন ফেরার রয়েছে। ৫ জন জেলে ছিলেন, যারা এদিন জামিন পেয়েছেন বাকি সবাই হাজির ছিলেন। কিন্তু, দুজন ফেরার থাকায় এদিন চার্জ গঠন করা যায়নি। পরবর্তী শুনানি ৯ আগষ্ট হবে বলে বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন।