• facebook
  • twitter
Tuesday, 7 January, 2025

মালদহের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলালের বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন চন্দ্রিমা

ঘটনার মূল চক্রী এখনও অধরা বলে অভিযোগ জানিয়েছেন দুলালের স্ত্রী চৈতালি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এইসব ভাড়াটে খুনিদের কে বা কারা 'সুপারি' দিয়েছে? ‘সুপারি কিলার’দের কারা টাকা দিয়েছে? বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিকমহলে যথেষ্ট জলঘোলা হতে শুরু করেছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মালদহে খুন হওয়া তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সোমবার তাঁর বাড়ি গিয়ে নিহত বাবলার স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন মন্ত্রী। তাঁর সমস্ত অভিযোগ শোনেন। সেসময় দুলালের স্ত্রী চৈতালি অভিযোগ করেন, নিছক ক্ষমতার লোভেই তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। যেহেতু তিনি রাজনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে গিয়েছিলেন, সেজন্য তাঁকে সহ্য হয়নি দলের একাংশের বলে ইঙ্গিত করেছেন। সেজন্যই খুন করা হয়েছে। তিনি মন্ত্রীর কাছে এই খুনের ঘটনার পিছনে থাকা মূল মাথাকে ধরার আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন।

এদিন চৈতালি দাবি করেন, ‘দুলাল চেয়ারম্যান হবেন, এমন কথা চলছিল। আমরা জানতাম। তা নিয়ে কিছু মানুষের হিংসা ছিল। বাবলা রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। অনেকে পিছিয়ে পড়ছিল। যাঁদের ক্ষমতার লোভ, তাঁরাই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন।’ তাঁর কথায়, ‘খুনিরা যদি ভাড়াটে হয়, তবে তো তার মাথা থাকবেই। পুলিশ সেই মাথা খুঁজবে। মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার তদন্তের উপর নজর রাখছেন। কেন দুলালের নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। সেই বিষয়টি কার নির্দেশে হয়েছে, তা-ও আগামী দিনে জানা যাবে।’

উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে আচমকা বাইকে করে আসে তিনজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী। তারা আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে দুলালের ওপর হামলা চালায়। এদিন সামাজিক মাধ্যমে সেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়। দেখা যায়, দুইজন দুষ্কৃতী পিস্তল উঁচিয়ে দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে ধাওয়া করে একটি দোকানের মধ্যে নিয়ে যায়। ভয়ে দোকানের মধ্যে থাকা দুইজন ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এরপর সেখানেই দুলালকে খুব কাছ থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পর বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ভাড়াটে খুনিরাও রয়েছে। কিন্তু ঘটনার মূল চক্রী এখনও অধরা বলে অভিযোগ জানিয়েছেন দুলালের স্ত্রী চৈতালি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এইসব ভাড়াটে খুনিদের কে বা কারা ‘সুপারি’ দিয়েছে? ‘সুপারি কিলার’দের কারা টাকা দিয়েছে? বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিকমহলে যথেষ্ট জলঘোলা হতে শুরু করেছে।

এদিকে মালদহের জেলা পুলিশ জানিয়েছেন, দুলালের খুনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং বাবলু যাদব। তাঁদের হদিশ দিতে পারলে দুই লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছে মালদহ জেলা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছে বিহার থেকে ভাড়া করা ‘শুটার’। ধৃতদের মধ্যে দুজন বিহারের বাসিন্দা।

তবে ‘সুপারি কিলার’দের কারা টাকা দিল, কারা খুনের পরিকল্পনা করল, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়েছে। এই আবহেই মালদহ জেলা পুলিশ জানায়, দুলালের খুনের সঙ্গে যুক্ত কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং বাবলু যাদব। তাঁদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা কোনও খোঁজ পুলিশকে দিতে পারলে দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার মিলবে।