কারামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে আর জি করের সঞ্জয় নিয়ে মুখ খুললেন চন্দ্রনাথ

জেলা বীরভূমের দলীয় রাজনীতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে অনুব্রত মণ্ডল-সহ তাঁর অনুগামীদের প্রতি। গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে যাওয়ার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুব্রত অনুগামী বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহের প্রতি বার বার তাঁর আস্থার নজির রেখে চলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বেআইনীভাবে সরকারি জায়গা জবরদখল করে যাঁরা ব্যবসা করছিলেন তাঁদের হঠিয়ে দেওয়ার অভিযান চলার সময় পূর্ব মেদিনীপুরের পর্যটন কেন্দ্র তাজপুরের সমুদ্র সৈকতের ধারের বেআইনী দখলদারদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে বন দফতরের মহিলা রেঞ্জার মনীষা সাউ রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির বাধার মুখে পড়েন। এমন কী, কারামন্ত্রী অখিল গিরি ওই মহিলা রেঞ্জারকে ‘অশ্লীল’ ভাষায় গালিগালাজও করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অখিল গিরিকে মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দিয়ে কারামন্ত্রীর দায়িত্ব নিজের হাতে রাখেন। এরপর ৯ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী কারামন্ত্রীর দায়িত্ব তুলে দেন বোলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের হাতে।

চন্দ্রনাথ সিংহ কারামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরে তিনি সিউড়ি পৌরসভার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে যেমন মুখ খোলেন তেমনি, তিনি বর্তমান সময়ে দলের আইটি সেলের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের কাজের বিষয়ে তাঁর উষ্মাও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে বিজেপি মিথ্যা ও নোংরা অপপ্রচার চালিয়ে রাজনৈতিক খেলা খেলতে নেমেছে। দলের আইটি সেলের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বিজেপির মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদ করতে হবে। সেইসাথে তিনি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই সিভিক ভালান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দেখতে হবে, সঞ্জয় যেন ধনঞ্জয় না হয়ে যায়। কেননা, এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ২০০৪ সালের ১৪ আগস্ট দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মী ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি হয়ে গিয়েছিল। ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার আজও তাঁদের ছেলেকে ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করে আসছেন। এবং তাঁরা জানিয়েছেনও যে, তাঁদের ছেলে গরীব বলেই প্রভাবশালী উচ্চবিত্ত খুনিকে আড়াল করতেই ‘অবিচার’ করে তাঁদের ছেলেকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।