এনআরসি বিরােধী পদযাত্রায় কার্যত নিজের শক্তি দেখিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সােমবার বেলা প্রায় পৌনে একটা নাগাদ পুরুলিয়া শহরের ভিক্টোরিয়া স্কুল চৌমাথা থেকে যখন তিনি পদযাত্রা শুরু করেন, তখন রাস্তায় কার্যত জনপ্লাবন। এর আগেই অবশ্য পুরাে শহর মুড়ে ফেলা হয়েছিল এনআরসি এবং সিএএ বিরােধী ব্যানার ফেস্টুনে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় শামিল তৃণমুল নেতা-কর্মীরাও নিজেদের পােশাক জড়িয়ে নেন এনআরসি বিরােধী স্লোগান লেখা পােস্টার। পূর্ব নির্ধারিত পথেই এদিন মিছিল বাস স্ট্যান্ডের পাশ দিয়ে নীলকুঠি ডাঙ্গা, স্টেশন হয়ে চকবাজার দিয়ে ফিরে আসে পুরুলিয়া ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। কাঁসর বাজিয়ে মিছিলে নেতৃত্ব দেন মমতা। তাঁর পাশে পাশে প্রায় চার কিলােমিটার যাত্রাপথ মিছিলে হাঁটেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী শান্তিরাম মাহাত, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যা টুডু সহ তৃণমূলের নেতানেত্রীরা।
এদিন রাস্তার দু’পাশে প্রচুর সাধারণ মানুষ জড়াে হন নেত্রীকে দেখার জন্য। বসত বাড়িগুলির উপর থেকেও বহু মানুষ হাত নাড়েন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে। প্রতি নমস্কার করেন মমতা ।
উল্লেখ্য, এবারের লােকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া জেলায়। তৃণমূলের কার্যত ভরাডুবি হয়। দু’লক্ষের বেশি ভােটে পুরুলিয়া আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। পুরুলিয়া শহরের মােট ২৩ ওয়ার্ডের মধ্যে কুড়িটি ওয়ার্ডেই এগিয়ে যায় বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবেই জেলায় তৃণমূলের অবস্থা অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে যায়। এনআরসি এবং সিএএ’কে হাতিয়ার করে নিজেদের হারানাে জমি পুনরুদ্ধারে নেমেছে তৃণমূল।
এদিন নেত্রীর পদযাত্রা পুরুলিয়ায় তৃণমূলকে অনেকটাই অক্সিজেন জোগাল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মিছিল শুরুর আগে প্রায় পনের মিনিট ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি সবাইকে বিজেপির বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। কোনও অবস্থাতেই সিএএ বা এনআরসি এই রাজ্যে মানা হবে না দাবি করে তিনি বলেন, কেন্দ্র আইন করলেও তা রাজ্য রূপায়ণ করে থাকে। কেন্দ্রের ক্ষমতা নেই রাজ্য বাদ দিয়ে কোনও আইন চাপিয়ে দেবার।
গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশে তাদেরকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অথচ পশ্চিমবঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন সভা ও মিছিল করেছে বিজেপি। এতেই বােঝা যায় কোন রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে।