কৃষি থেকে শিক্ষায় অভিষেকের প্রশ্নে কেন্দ্রের স্বীকারোক্তি

ফাইল চিত্র

‘সমগ্র শিক্ষা অভিযান’-এ বাংলার জন্য বরাদ্দ অর্থের অঙ্ক কমানো এবং ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’-তে বাংলার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা এবং কৃষি সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নের জবাবে যথাক্রমে সোমবার এবং মঙ্গলবার লোকসভায় যে পরিসংখ্যান পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী ভাগীরথ চৌধুরী, তাতে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার সূচনা থেকে চলতি অর্থবর্ষ পর্যন্ত, এই প্রকল্পে রাজ্যভিত্তিক কৃষক অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা কত? নির্দিষ্ট ফসলের জন্য বছর ও রাজ্যভিত্তিক কৃষকদের থেকে সংগৃহীত প্রিমিয়ামের পরিমাণই বা কত?

তাছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায়ভুক্ত বিমা সংস্থাগুলির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়ন্ত্রক কাঠামোর ভূমিকা কী? কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নিকট ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’ সংক্রান্ত এমন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন লিখিতভাবে তুলে ধরেছিলেন সাংসদ। যার জবাবে নির্দিষ্ট তালিকা পেশ করে কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বাংলা থেকে এই প্রকল্পে কৃষক অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা বাস্তবেই শূন্য। অন্যদিকে, সংগৃহীত প্রিমিয়াম এবং কৃষকদের দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বাংলার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পে কেন্দ্র সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়।

এখানেই শেষ নয়, কেন্দ্র সরকারের পেশ করা ‘সমগ্র শিক্ষা অভিযান’ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এই প্রকল্পে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বাংলার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৭৬৭.৪৮ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবর্ষে বাংলার জন্য বরাদ্দ ছিল ১৭৭৩.৩৮ কোটি টাকা। সাংসদ অভিষেকের প্রশ্নের উত্তরে একথাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। কীসের ভিত্তিতে বরাদ্দ টাকা কমানো হচ্ছে, কেন এই প্রকল্পের খাতে বরাদ্দ টাকা বাংলাকে দেওয়া হচ্ছে না, লোকসভায় লিখিত প্রশ্নের মাধ্যমে সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাংসদ। তাঁর কৃষি এবং শিক্ষা এই দুই বিষয়ের প্রশ্নেরই কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি মোদী সরকারের মন্ত্রী।


কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে বারংবার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলার শাসকদল। এ প্রসঙ্গেই তৃণমূলের অভিযোগ, ‘বিজেপির জমিদারদের বারংবার প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলার জনগণ এবং স্কুলগুলির নামের পাশে ‘প্রধানমন্ত্রী’ যোগ করতে অস্বীকার করেছে বাংলা, সেই কারণেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনা।’ অভিষেকের ভাষায়, ‘ব্যক্তি বিশেষ মিথ্যে বললেও তথ্য-পরিসংখ্যান কখনও মিথ্যে বলে না।’ তারই প্রমাণ মিলেছে সংসদে অভিষেকের লিখিত প্রশ্নের জবাবে।