নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা সেখ সুফিয়ানকে সিবিআই তলব করল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি পদে রয়েছেন সেখ সুফিয়ান। বিধানসভা ভােটের পরে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতিকে পিটিয়ে খুন করার অভিযােগ ওঠে। তদন্তে একাধিকবার সেখ সুফিয়ানের নাম উঠে এসেছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে মে মাসের তারিখ। ১৩ মে কলকাতায় এই বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়। সুফিয়ানকে সিবিআই তলব করলেও বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভােট পরবর্তী হিংসা খুন ও ধর্ষণের গুরুতর অভিযােগগুলি তদন্ত করছে সিবিআই।
নন্দীগ্রামের কাছে সিবিআই যে ক্যাম্প করেছে সেখানে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার মধ্যে সেখ সুফিয়ানকে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তারা সেখ সুফিয়ানের দিকে অভিযােগের আঙুল তুলেছেন।
এ বিষয়ে তৃণমূল নেতার প্রতিক্রিয়া জানতে সিবিআই তাকে তলব করেছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত নন্দীগ্রাম কৃষক আন্দোলন থেকে উঠে আসা দাপুটে নেতা সেখ সুফিয়ান। সূত্রের খবর, সােমবার সিবিআই-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার চার আধিকারিক কলকাতায় এসেছেন।
রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে তারা সংগ্রহ করেছেন। ওই তথ্যের উপর ভিত্তি করে আগামী দিনে সিবিআই আরও বেশ কয়েকটি এফআইআর করবেন বলে জানা যাচ্ছে। বাংলাকে চারটি জোনে ভাগ করে সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। কলকাতা, দক্ষিণবঙ্গ, পশ্চিমাঞ্চল উত্তরবঙ্গ এই চারটি জোনে ভাগ করা হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইলেকশন এজেন্ট ছিলেন সেখ সুফিয়ান ভবানীপুরের উপনির্বাচনে ফের প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক সেই সময় মমতার প্রাক্তন ইলেকশন এজেন্টকে সিবিআইয়ের তলব নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন বাড়ছে।
এদিকে ভবানীপুরে ভােটের মুখে আচমকাই রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বুদ্ধিজীবী ও নাট্যব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘােষ। বুধবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে তিনি তার ইস্তফা পত্র জমা দেন। একটি মহল থেকে বলা হচ্ছে, দলের নির্দেশেই নাকি তার এই সিদ্ধান্ত। তাকে হয়তাে অন্য কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হবে সেকারণেই তাকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। যদিও এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
এদিকে, এদিন রাজ্য বিধানসভায় আসেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রার্থী সুস্মিতা দেব। তার মনােনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে এদিন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মুখ্য সচেতক নির্মল ঘােষের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন।
তবে জোরদার জল্পনা তৈরি হয়েছে অর্পিতা ঘােষের ইস্তফা নিয়ে কারণ ১৯-এর লােকসভা ভােটে অর্পিতা পরাজিত হন। তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে রাজ্য সভায় পাঠান। অর্পিতাকে পুনর্বাসন দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
যতদূর জানা গিয়েছে তৃণমূল চাইছে সংসদে আগামী দিনে কেন্দ্র বিরােধীতায় ঝড় তুলতে। ফলে সংসদে ভালাে বলতে পারেন এমন কোনও নেতাকে সেখানে পাঠাতে। তৃণমূলে এখন এমন অনেকে আছেন যাঁরা দলকে আরও ভালােভাবে জাতীয় স্তরে তুলে ধরতে পারবেন। সেই অঙ্কে অর্পিতার ইস্তফা কিনা জল্পনা তুঙ্গে।