গরু পাচার কাণ্ডে রাজ্যের ৬ জন পুলিশ অফিসারকে ডেকে পাঠাল সিবিআই। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন আইপিএস অফিসার। কল্লোল গনাই, অংশুমান সাহা, তথাগত বসু। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে কল্লোলবাবু এক সময়ে মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। বর্তমানে তিনি আইজি আইবি।
অংশুমান সাহাও ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। বর্তমানে তিনি আসানসােল কমিশনারেটে কর্মরত। আর তথাগত বসু হুগলির পুলিশ সুপার ছিলেন। এখন তিনি চন্দননগর কমিশনারেটের ডিসি পদে রয়েছেন। গরু পাচার কাণ্ডে যে জেলার নাম বারবার উঠে আসছিল, তা হল মুর্শিদাবাদ জেলা।
আর এনামুল গ্রেফতারের পর থেকেই এই বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য উঠে আসছিল। ওদিকে আসানসােলের নামও কয়লা পাচার কাণ্ডে বারবার উঠে আসছিল। সেদিক থেকেই কল্লোল, গনাই ও অংশুমান সাহাকে সিবিআইয়ের এই তলব যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তথাগত বসুকে সিবিআইয়ের তলবের কারণটা কী?
মনে করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই গরু ও কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে হুগলির কোন্নগরে হানা দিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু চন্দননগরের কমিশনারেটের মধ্যে সেই এলাকা পড়লেও তথাগত বসুর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। কারণ শ্রীরামপুরের ডিসি সায়ক দাস কোন্নগর এলাকার দায়িত্বে রয়েছে।
তবে সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করছে, এই পুলিশ কর্তার সঙ্গে শাসকদলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতার যােগ রয়েছে বলে তাদের কাছে খবর রয়েছে। তারা এও জানতে পেরেছে। যে, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্র আবার সেই নেতার আস্থাভাজন।
কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডে লালা ওরফে অনুপ মাঝির সন্ধান এখনও পায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এর মধ্যেই ৩১ ডিসেম্বর গরু পাচার কাণ্ডে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী বিনয় মিশ্রর তিনটি বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি অভিযানচালায়। সিবিআইয়ের দাবি, বিনয় মিশ্রর মাধ্যমে গরু পাচারের টাকা কয়েকজন প্রভাবশালীর কাছে পৌঁছত।
সিবিআই আরও দাবি করেছে, একাধিক সাক্ষীর বয়ান ওই ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। তবে তল্লাশি অভিযানের সময় বিনয়কে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। সিবিআই তাকে হাজিরার নােটিশ পাঠায়। এর আগেও গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে এক ডিআইজি সহ বিএসএফের ৪ অফিসারকে নােটিশ পাঠায় সিবিআই। ওই ৪ জন অফিসারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজাম প্যালেসে হাজির হতে বলা হয়।
সিবিআই সূত্রের খবর যে, ৪ অফিসারকে হাজির হতে বলে নােটিশ পাঠানাে হয়েছিল তাঁদের মদ্যে একজন ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার। এছাড়া দু’জন ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট ও একজন ডেপুটি কমান্ডান্ট পদমর্যাদার অফিসার।
এদের সকলের নামই তদন্তে উঠে এসেছিল। তাই এঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছিল সিবিআই। এর আগে এই মামলাতেই বিএসএফের কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এমনকি গরু পাচার কাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড এনামূল হকও আত্মসমর্পণ করেছে।