ভুয়ো নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে মালবাজার পৌরসভাকে নোটিশ সিবিআইয়ের

মালবাজার পৌরসভা। ফাইল চিত্র।

ভারতের ভুয়ো নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে সিবিআইয়ের নজরে এল মালবাজার পৌরসভা। কয়েকদিন আগে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে সন্দেহভাজন ৬ জনকে আটক করা হয়েছিল। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মালবাজার পৌরসভাকে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার নোটিশ পাঠাল সিবিআই।

বিদেশি নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিকত্বের ভুয়ো নথি পাওয়া নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। অভিযোগ, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের নাগরিকরা বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকে আধার কার্ড সহ বিভিন্ন ভুয়ো নথি জোগার করে। রাজ্যের বিরোধীদের দাবি, রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য এই সকল অনুপ্রবেশকারীদের মদত দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এই অভিযোগ মানতে রাজি নয় রাজ্যের শাসকদল।

কয়েকদিন আগে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে সন্দেহভাজন ৬ জনকে আটক করেছিল সিবিআই। তাঁরা আফগান নাগরিক বলে সন্দেহ হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ভুয়ো নথির মাধ্যমে এই ৬ জন ভারতীয় নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট তৈরি করিয়েছেন। জানা গিয়েছে, ধৃতরা মালবাজার পৌরসভা এলাকায় তাঁদের জন্মের সরকারি নথি জমা দেন। এরপরেই সিবিআই খোঁজখবর শুরু করে। অভিযোগ, সেই নথি ব্যবহার করেই ধৃতরা পাসপোর্ট তৈরি করিয়েছিলেন। খবর পাওয়ার পর গত নভেম্বর মাসে মালবাজার পৌরসভাকে প্রথম নোটিশ পাঠায় সিবিআই। সেই নোটিশের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। ফলে গত ৫ ডিসেম্বর ফের মালবাজার পৌরসভাকে নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নোটিশে পৌরসভার থেকে একাধিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। কোন গ্রাউন্ডে ওই ৬ জনের জন্ম ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মৃত্যুর সংশাপত্র দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে বলেছে সিবিআই। এই মামলায় মালবাজার পৌরসভা থেকে মোট ১৫ জনের জন্ম ও মৃত্যুর সংশাপত্র সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়েছে।


এবিষয়ে মাল পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, ‘আমরা প্রথম চিঠিটা পাইনি। তবে গতকাল দ্বিতীয় চিঠি পেয়েছি। যাবতীয় তথ্য সিবিআইকে দেব। ভোটের রাজনীতি আমরা করি না। যে নথি জমা পড়ে তার ভিত্তিতেই জন্ম মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়। বাকিটা সংস্থা খতিয়ে দেখুক।’ মালবাজার পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ী বলেন, ‘আমরা সিবিআইকে যাবতীয় নথি দ্রুত পাঠাব। কিন্তু, কারা কীভাবে এসব পেল তা আমরা কীভাবে বলব? পৌরসভায় যারা এই কাজ করেন তাঁদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। দেখা যাক। বাকিটা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখুন।’

মালবাজার পৌরসভা তৃণমূল পরিচালিত হওয়ায় এবিষয়ে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘আফগান, পাকিস্থান আর বাংলাদেশ মিলেমিশে একাকার। ভয়ঙ্কর ঘটনা। আফগান নাগরিক মালবাজার পৌরসভার নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জন্ম মৃত্যুর নথি কিভাবে পান? পাসপোর্ট বানাতে এসব নথি দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত মাল পৌরসভা। যে ৬ জন ধরা পড়লেন তাঁদের নিয়ে তদন্ত হবে। কিন্তু যারা ধরা পড়েননি? মৌলবাদীদের এভাবেই ভারতে এবং বিশেষ করে এ রাজ্যে আশ্রয় দিচ্ছে কারা?’