আরজি কর কাণ্ডে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সিল মোহর দিল সিবিআই

আরজি করের ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে চার্জশিটে ছাড়পত্র দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার ময়নাতদন্তে কোনও কারচুপি করা হয়নি। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের সময় কোনও অনিয়মও হয়নি। সিবিআই-এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সব নিয়ম মেনেই ময়নাতদন্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এইমস-এর চিকিৎসকরাও একই দাবি করেছেন। ফলে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কারচুপির যে অভিযোগ ছিল, তা কার্যত খারিজ হয়ে গেল।

চার্জশিটে ময়নাতদন্ত নিয়ে বলা হয়েছে, তদন্ত চলাকালীন আরজি করের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও ভিডিওগ্রাফি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি কমিটি গড়া হয়েছিল। কমিটির মাথায় রাখা হয়েছিল এইমস কল্যাণীর ফরেন্সিক বিভাগের প্রধানকে। তাঁরা রিপোর্ট দিয়েছেন। সেই রিপোর্টে যা যা রয়েছে, তা যথেষ্ট এবং নির্ভুল বলে দাবি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিয়ম না মেনে তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত এবং দেহ সৎকার নিয়ে উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। মৃতের পরিবার, রাজনৈতিক মহল এবং চিকিৎসকদের একাংশ বিষয়টি নিয়ে তাড়াহুড়ো করার অভিযোগ এনেছিল। এছাড়া ঘটনার পরপরই আর জি করের সেমিনার রুমের সংলগ্ন দেওয়াল ভেঙে ফেলা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ করা হয়, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের। যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন ও প্রতিবাদ এখনও অব্যাহত।


আর জি করের ঘটনায় প্রথম থেকেই একটি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হচ্ছিল বিভিন্ন মহল থেকে। বিষয়টি নিয়ে গণধর্ষণের ধারণা বদ্ধমূল হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গলদের অভিযোগ আনা হয়েছিল। রাজ্য পুলিশের ওপর ভরসা হারায় অনেকে। এজন্য সিবিআই তদন্তের ওপর অনেকেই নির্ভরশীল ছিলেন। অবশেষে আদালতে ঘটনার ৫৮ দিনের মাথায় সোমবার ২১৩ পাতার চার্জশিট পেশ করে সিবিআই।

এদিকে ময়নাতদন্তের সময় জুনিয়র ডাক্তাররা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সইও করেন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। এরপরও কারচুপির অভিযোগ উঠলে তাঁরা দাবি করেন, ময়নাতদন্তে তাঁদের কোনও ভূমিকা ছিল না। তাঁরাও সিবিআই-এর হস্তক্ষেপে বিষয়টির তদন্তের দাবি করেন। জুনিয়র ডাক্তারদের এই অবস্থান নিয়ে সন্দেহ আরও ঘোরালো হয়। অনেকেই কারচুপির অভিযোগকে সত্যি বলে মেনে নিতে শুরু করেন। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও মামলার শুনানির সময় ময়নাতদন্তের পদ্ধতিগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জানতে চান, চালান ছাড়া কীভাবে ময়নাতদন্ত হল? সিজারলিস্ট এবং মৃতার শরীরের পোশাকের বিবরণ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।