আরজি করের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া তথ্য প্রকাশ সিবিআই-এর, দাবি তৃণমূল নেতার

ফাইল চিত্র

আরজি করে তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সম্প্রতি সঞ্জয় রায়ের একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যের রাজনৈতিক মোড় ঘুরে যেতে পারে। যার ফলে আখেরে লাভ হবে তৃণমূল কংগ্রেসেরই। রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন দাস। তিনি আরজিকর সংক্রান্ত ঘটনার তদন্তের একাধিক রিপোর্ট ও মামলার নথির স্ক্রিনশটও পোস্ট করেছেন তাঁর যুক্তির সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে।

তিনি দাবি করেছেন, সিবিআই সঞ্জয় রায়ের চুলের নমুনা সহ অন্যান্য ফরেন্সিক নমুনা আদালতে তথ্যপ্রমাণ হিসেবে পেশ করেছে। যা সঞ্জয় রায়ের স্বীকারোক্তির সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। যা থেকে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে, এই ঘটনায় সঞ্জয় রায়ই দোষী। প্রসঙ্গত আরজিকরের ঘটনার পর ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সেখানে ভিসেরা সহ নানান বায়োলজিকাল নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। যা সঞ্জয় রায়ের কিনা মিলিয়ে দেখার জন্য কলকাতা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়। নমুনায় কোনও গলদ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য সম্প্রতি সেইসব নমুনা পরীক্ষা করা তিন বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তাতেই উঠে আসে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।

কিন্তু কেন ডাকা হয়েছিল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের? এবিষয়ে উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট আরজি করের সেমিনার হলে তরুণীর দেহ উদ্ধারের পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা একাধিক নমুনা সংগ্রহ করে। অভিযোগ ওঠে, ওই নমুনা সংগ্রহের বেশ কয়েকদিন পর সেগুলি ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। বলা হয়, নমুনাগুলি গত ১৪ আগস্ট কেন্দ্রীয় ল্যাবে পাঠানো হয়। এই সময়ের মধ্যে সংগৃহীত বায়োলজিক্যাল নমুনা বদল করা হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। তাছাড়া রক্তের নমুনা নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সংগ্রহ করা না হলে রিপোর্ট প্রভাবিত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। সেজন্য কী পদ্ধতি মেনে রক্ত সহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা জানতেই ওই বিশেষজ্ঞদের ডেকে পাঠানো হয়। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, ঘটনার তথ্যপ্রমাণ লোপাটের একাধিক সূত্র পাওয়া গিয়েছে। তার জেরে আরজিকরের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। যার জেরে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।


কলকাতা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবের তিন বিশেষজ্ঞের সাক্ষ্য গ্রহণের পর বিষয়টি হাতিয়ার করেন তৃণমূল নেতা নীলাঞ্জন দাস। দলের পক্ষ নিয়ে সরব হয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। তিনি লিখেছেন, ‘আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সঞ্জয় রায়ের শুনানি বড় মোড় নিল! সঞ্জয় রায়ের চুলের নমুনা এবং অন্যান্য ফরেন্সিক নমুনা সিবিআই তথ্যপ্রমাণ হিসেবে পেশ করেছে। সঞ্জয় রায়ের স্বীকারোক্তির সঙ্গে তা মিলে যাচ্ছে। এই ফরেন্সিক তথ্যপ্রমাণ এবং বিচার প্রক্রিয়া থেকে এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে, কলকাতা পুলিশের তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছিল। সঞ্জয় রায়ের আইনজীবীদের কাজ এখন আরও কঠিন হয়ে গেল। সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সঞ্জয় রায়ের আইনজীবীরা এখন তাঁদের পরিকল্পনা পালটাতে পারেন। এত প্রমাণ পেশের আবহে তাঁরা মক্কেলের মুক্তির দাবির বদলে সাজা কমানোর দিকে ঝুঁকতে পারেন।’ ওই তৃণমূল নেতা আরও দাবি করেন,’সিবিআই-এর এই তদন্তে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এটা থেকে রাজনৈতিক লাভ দেবে।’