নদিয়ার কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের দফতরে হানা দিল সিবিআই

অঙ্কিতা আচার্য, নদিয়া, ২৩ মার্চ— নদিয়ার কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের দফতরে হানা দিল সিবিআই৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের সিদ্ধেশ্বরীতলায় যেখানে মহুয়ার সাংসদ কার্যালয় রয়েছে, সেখানে গিয়েছেন সিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যের একটি দল৷ বাডি় ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১০ জন জওয়ান৷ তল্লাশি চলছে গোটা বাডি়তে৷

সিদ্ধেশ্বরী তলায় যেখানে মহুয়া থাকেন সেখানে এসেছেন সিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যের একটি দল৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জোর শোরগোল এলাকায়৷ উৎসুক জনতার ভিড় বাড়ছে বাডি়র চারপাশে৷ তবে কাউকেই ঢুকতে দিচ্ছেন না জওয়ানেরা৷ সূত্রের খবর, এই বাডি়তে মহুয়া খুব একটা থাকেন না৷ বেশিরভাগ সময় থাকেন করিমপুরের বাডি়তে৷ সিদ্ধেশ্বরী তলার পর সিবিআই করিমপুরের বাডি়তে যাবে কি না তা নিয়ে চলছে চাপানউতোর৷ যদিও এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি৷ যদিও সকালে জানা গিয়েছিল সেখানে যেতে পারে সিবিআই৷

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে নির্বাচনের সময় সিদ্ধেশ্বরী তলার এই বাডি় থেকে কাজ করেছিলেন মহুয়া৷ সেই বাডি়তেই হানা দিল সিবিআই৷ এদিন সকালে করিমপুরের বাডি়তে ছিলেন মহুয়া৷ যদিও বর্তমানে সেই বাডি়তে পডে়ছে তলা৷ সূত্রের খবর, বাডি়তে নেই মহুয়া৷ দলীয় প্রচারে গিয়েছেন সকালেই৷


কৃষ্ণনগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জনি মোদক নামের এক ব্যক্তির বাডি় ভাড়া নিয়ে সাংসদ কার্যালয় তৈরি করেন মহুয়া৷ সাংসদ হওয়ার পর সেখান থেকেই প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করতেন৷ শনিবার সিবিআই আধিকারিকেরা যখন ওই বাডি়তে যান, তখন বাডি়র মালিক জনিই দরজা খুলে দেন৷ কৃষ্ণনগরে মহুয়ার সাংসদ কার্যালয়ে সিবিআই হানা প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সৌগতকৃষ্ণ দেব বলেন, ‘ভোটের আগে বিরোধীদের হেনস্থা করার জন্যই বিজেপি এ সব করাচ্ছে৷ কিন্ত্ত এই সব করে মহুয়া মৈত্রকে রোখা যাবে না৷’

বিপদ বেড়েই চলেছে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্রের৷ শনিবার মহুয়ার কলকাতার বাডি়তে পৌঁছে গেল সিবিআই৷ সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের একটি দল এদিন সকালে আলিপুরে ‘রত্নাবলী’ নামে একটি আবাসনে যায়৷ ওই আবাসনের ন’তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন মহুয়ার বাবা দ্বীপেন্দ্রলাল মৈত্র৷ সেখানেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের একটি দল গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে৷ যদিও সিবিআইয়ের এই হানার ব্যাপারে বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ-এর কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি৷

মহুয়ার বিরুদ্ধে নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ ছিল সুনির্দিষ্ট৷ এক, শিল্পপতির থেকে টাকা ও দামি উপহার নিয়ে তাঁর ব্যবসায়িক স্বার্থরক্ষায় সংসদে প্রশ্ন করেছিলেন মহুয়া মৈত্র৷ দুই, ওই শিল্পপতিকে সংসদের ওয়েবসাইটের লগ-ইন পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছিলেন মহুয়া৷ এ ব্যাপারে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছেও অভিযোগ করেছিলেন নিশিকান্ত৷ এরপরই প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডের অভিযোগে বহিষ্কৃত হন তৃণমূল সাংসদ৷
কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে গত ১৯ মার্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল৷ লোকপালের সেই নির্দেশ মেনে মহুয়ার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার এফআইআর দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার এথিক্স কমিটিও এ ব্যাপারে তদন্ত করছে৷ কমিটি নিশিকান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷ মহুয়াকেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷ তবে মহুয়া অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁকে নোংরা প্রশ্ন করা হচ্ছিল৷ তাই তিনি কমিটির বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন৷ এরপরই সংসদ পদ থেকে মহুয়াকে বহিষ্কার করছিল এথিক্স কমিটি৷ এরপরই তদন্তে নামে লোকপাল৷ আগামী ৬ মাসের মধ্যে সিবিআইকে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে লোকপাল৷