• facebook
  • twitter
Wednesday, 22 January, 2025

সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে হাইকোর্টে সিবিআই

রাজ্যের আবেদনে প্রশ্ন তুলেও

ফাইল চিত্র

রাজ্যের পর এবার আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল সিবিআই। দিল্লির সদর দপ্তরের সিদ্ধান্ত মতো বুধবার এই সংক্রান্ত আবেদন জানানো হয়েছে। এদিনই দোষীর ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য যে আবেদন করেছিল তার শুনানি হয়েছে। রাজ্যের আবেদনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললেও এই আবহেই সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে সিবিআই–ও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল।

গত শনিবার আরজি করে ধর্ষণ–খুনের মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিয়ালদহ আদালত। সোমবার তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। সেই দিনই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে হাইকোর্টে আবেদন জানাবে রাজ্য। সেইমতো গত মঙ্গলবারই সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেওয়া হয়। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। যদিও সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার এক্তিয়ার রাজ্যের আদৌ রয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। উপযুক্ত সাজা ঘোষণা হয়নি এই মর্মে বিরোধিতা করে পুলিশ বা রাজ্যের মামলা করার অধিকার নেই বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির সময় এই মামলার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আইনজীবী রাজ্যের আবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাজ্য কীভাবে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে? এই ধরনের আবেদনের ভিত্তি কী? নির্যাতিতার পরিবার, সিবিআই বা দোষী পক্ষের কেউ হাইকোর্টে আপিল না করলেও, রাজ্যের এই পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন, যেখানে হাইকোর্ট রাজ্যের আবেদনকে গ্রহণযোগ্য বলে মেনে নেয়নি।

অপরদিকে সিবিআইয়ের যুক্তির বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায়। তাঁরা ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, লালুপ্রসাদের মামলার সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডের তুলনা করা যায় না। সিআরপিসি ৩৭৭ এবং ৩৭৮ ধারার অধীনে রাজ্যের এই আবেদন আইনসঙ্গত। পাশাপাশি সরকার পক্ষের আরও দাবি, প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের কাছেই অভিযোগ জানিয়েছিল পরিবার। পুলিশই ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করে। পরে আদালতের নির্দেশে সিবিআইয়ের উপর তদন্তভার বর্তালেও রাজ্যের হাত থেকে অধিকার কেড়ে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। সাজা নিয়ে রাজ্য তাদের আপত্তি জানাতে পারবে না এমন নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই রাজ্যও আবেদন জানাতে পারে।

বুধবার হাইকোর্টের এজলাসে দোষী সঞ্জয় রায়ের এক আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন। ওই আইনজীবী জানান, তিনি সঞ্জয়ের পক্ষে মামলা লড়তে চান। তবে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানান, সঞ্জয়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে এবং ওকালতনামায় স্বাক্ষরের অনুমতিও দিতে হবে।
এরপর পাঁচের পৃষ্ঠায়