রবিবার ছুটির দিনেও স্বস্তিতে নেই সিবিআই। রাজীব কুমারকে নাগালে পেতে মরিয়া তারা। নােটিশ দিয়েও শনিবার রাজীবের দর্শন না মেলায় বেজায় খাপ্পা রাজ্যের সিবিআই আধিকারিকরা। নােটিশের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেই শহর জুড়ে হন্যে হয়ে রাজীব কুমারের খোঁজ শুরু করেন তাঁরা।
রবিবার হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের এডিজি সিআইডি’র সন্ধানে এবার নবান্নে হাজির হন সিবিআই’র দুই আধিকারিক। অন্যদিকে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন সিবিআই’র আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর। প্রতাপশালী আইপিএস-কে বাগে আনতে তাঁর সমস্ত পথই বন্ধ করতে ‘আইনি ফাঁদ’ পাততে শুরু করেছে সিবিআই। রাজীবের রক্ষাকবচ উঠিয়ে নেওয়ার অপেক্ষাতেই ছিল সিবিআই।
রবিবার ছুটির বিকেলে রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দফতরে চারটি চিঠি নিয়ে পৌঁছে যান সিবিআই’র দুই প্রতিনিধি। উদ্দেশ্য কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন নগরপালের বর্তমান অবস্থান জানা। রাজ্য পুলিশের ডিজি, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবের নামে চারটি চিঠি নিয়ে যান তাঁরা। ছুটি থাকায় সরকারি সমস্ত দফতর বন্ধ বলে জানানাে হয় তাঁদের। কিন্তু নাছােড় সিবিআই প্রতিনিধিদের মানায় কার সাধ্য। সিংহদ্বারে হাজার ওজর আপত্তি সত্ত্বেও শেষমেশ নবান্নে প্রবেশের ছাড়পত্র পান সিবিআই’র দুই প্রতিনিধি। সেখানে ডিজি’র চিঠি দিতে সক্ষম হলেও সােমবার কাজের দিনেই একমাত্র মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্যসচিবকে চিঠি দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানানাে হয়।
সিবিআই সূত্রের খবর, ‘মেঘদূত’ রাজীবের পাল্টা চাল দেওয়ার আগেই রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাছে পৌঁছে যেতে এই উদ্যোগ। শনিবার সিবিআই-কে ইমেল মারফৎ রাজীব কুমার জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। একমাস পর তিনি দেখা করতে সক্ষম হবেন। সেই সঙ্গেই তাঁর মােবাইল ফোন বন্ধ। গত দু’দিন ধরে শত চেষ্টা করেও রাজীব কুমারের সঙ্গে যােগাযােগ করে উঠতে পারেননি সরদা কেলেঙ্কারি মামলার তদন্তকারী দল। তাই ‘মুডি’ রাজীবের ‘যেমন খুশি আচরণ’ আর বরদাস্ত করতে রাজি নয় সিবিআই।
এবার আর রাজীবের মর্জিমাফিক চলার পরােয়া করবেন না তারা। আইপিএস সার্ভিস রুল অনুযায়ী, ছুটি নিলেও আধিকারিকদের নিজেদের ফোন নম্বর ও ঠিকানা জানিয়ে যেতে হয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাছে। যাতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাঁদের সঙ্গে যােগাযােগ করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে রাজীব সিবিআই-কে এড়িয়ে গেলেও আইপিএস সার্ভিস রুল অমান্য করবেন না বলেই মনে করছেন সিবিআই’র শীর্ষ আধিকারিকরা। এছাড়া রাজীবের ছুটি মঞ্জুর করবেন ডিজি। এবং এ বিষয় জানবেন মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব। চিঠি ছাড়া হাইকোর্টের রায়ের প্রতিলিপিও সঙ্গে দিয়েছে সিবিআই। তাই এবার ঘুরপতেই রাজীবের নাগাল পাওয়ার চেষ্টা তাঁদের।
অন্যদিকে আইনিপথেও তাকে বেঁধে ফেলতে সব রকমের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সিবিআই শীর্ষ আধিকারিকরা। সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছে রাজীব কুমার যাতে ফের রক্ষাকবচ আদায় করতে সক্ষম না হন তার জন্য দিল্লি পৌঁছে গিয়েছে সিবিআই’র আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর।