পুজো মিটতেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তৎপর সিবিআই। মঙ্গলবারই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেরা করতে প্রেসিডেন্সি জেলে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুজোর আগে জেলে গিয়ে পার্থকে জেরার ব্যাপারে সিবিআই আদালতের কাছ থেকে অনুমতি পেয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। এবার পুজো মিটতেই কোমর বেঁধে নামল কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
পুজোর আগে গরু পাচার মামলা থেকে শুরু করে একাধিক মামলায় বহু হেভিওয়েটের জেলমুক্তি ঘটেছে। সেই থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, তবে কি পুজোর আগে ছাড়া পেতে চলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও? তবে জেলমুক্তি তো দূর, উল্টে বিপদ আরও বাড়ে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। গত ১ অক্টোবর বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয় পার্থকে। সেদিনই প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারের আবেদন জানায় সিবিআই।
আদালত সেই আবেদন মঞ্জুরও করে। এর পরই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি আদালতে হাজির করানোর পর গ্রেপ্তার করা হয় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অয়নক শীলকেও। পার্থকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরার আবেদন না জানালেও জেলে গিয়েই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের আর্জি জানায় সিবিআই। সেই আবেদন মঞ্জুরও করে আদালত।
সেই মতো পুজো মিটতেই তদন্তে গতি আনতে তৎপর সিবিআই। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলেই পার্থকে জেরা করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ২০২৪ সালের টেট পাস না করা চাকরিপ্রার্থীদের বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ উঠেছিল। এই অনিময়ের নেপথ্যে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছিল বলে অভিযোগ।
গত দু’বছর ধরে এই মামলা চললেও জট এখনও পুরোপুরি খোলেনি। তাই তদন্ত শীঘ্রই শেষ করতে এবার আসরে সিবিআইও। নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেরা তদন্তকারী আধিকারিকদের।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। তার আগে পার্থ-‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। উদ্ধার হয়েছিল বিপুল নগদ, সোনা, বিদেশি মুদ্রা।
ইডির হিসেব অনুযায়ী, সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ-অর্পিতাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই-ও। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে পার্থর জামিন-মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। তবে রায়দান স্থগিত রেখেছে হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।