এবার কি বরফ গলবে? নাকি দুই পক্ষ একে ওপরের অবস্থানে অনড় থাকবে? তবে যা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্কের ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যপাল। দুপক্ষের মধ্যে মিষ্টিও দেওয়া-নেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের তরফে এই সদার্থক বার্তা স্রেফ মুখের কথা, নাকি সত্যিই তিনি সম্পর্কের উন্নতি চান, সেটাই এখন দেখার পালা। জয়ী ছয় তৃণমূল বিধায়ককে বিধানসভায় এসে শপথ পাঠ করাতে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে, বিধায়কদের শপথ নিয়ে অযথা জটিলতা তৈরি করেছেন তিনি । এবার বিধানসভার চিঠির কী জবাব দেন সি ভি আনন্দ বোস, সেদিকে তাকিয়ে বিধানসভা।
২৫ নভেম্বর থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রের খবর, জয়ী ৬ তৃণমূল বিধায়ককে বিধানসভায় এসে শপথ পড়াতে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এ নিয়ে রাজভবনে চিঠি দিচ্ছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপাল না আসতে চাইলে সেক্ষেত্রে তাঁকে অনুরোধ করা হবে, কাউকে যেন তিনি শপথ পড়ানোর দায়িত্ব দিন। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপাল বিধানসভায় এসে শপথ পড়াতে না চাইলে এই দায়িত্ব তিনি হাউসের স্পিকারকেই দেন। তবে বারবার এই শপথপাঠ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বলা যায়, বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার বিধায়ত রেয়াত হোসেন সরকারের শপথ নিয়ে টালবাহানা চলে দীর্ঘদিন ধরে। রাজভবনে গিয়ে তাঁদের শপথ নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কিন্তু তাতে নারাজ ছিলেন নবনির্বাচিত বিধায়করা। পালটা তাঁদের আবেদন ছিল, রাজ্যপাল যেন বিধানসভায় আসেন। এই ইস্যুতে তাঁরা বিধানসভার সামনে ধরনায় বসেন। এই টালবাহানা শেষে ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এবার যাতে এধরনের কোনও ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেকথা মাথায় রেখেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলছেন। তাহলে সেই সুসম্পর্কের খাতিরেই তিনি জয়ী ছয় বিধায়কের শপথ পড়াতে বিধানসভায় আসুন। আর তাতেও তাঁর যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে কাউকে দায়িত্ব দিন শপথ পাঠ করানোর।’
বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে দু’বছর পূর্ণ করেছেন বোস। আর সেই আনন্দে রাজভবনের ভেতর নিজের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করে নিজেই তা উদ্বোধন করেছেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মিষ্টি- ফলের ঝুড়ি পাঠিয়ে রাজভবনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে শুক্রবার রাতেই চিঠি দেন বোস। তাঁর বক্তব্য, ‘আমাদের প্রথম বছরটা ছিল আনন্দময়। দ্বিতীয় বছরে কিছু কালো মেঘ জন্মেছিল পারস্পরিক সম্পর্কে মেঘ জমেছিল। তৃতীয় বছর থেকে একসঙ্গে বাংলাকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে চাই।’