রেজিস্ট্রেশন বাতিল মামলায় সন্দীপের আবেদন নাকচ হাইকোর্টের

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আরও অস্বস্তিতে সন্দীপ ঘোষ। হাইকোর্টে বড় ধাক্কা আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের। রেজিস্ট্রেশন বাতিল সংক্রান্ত মামলায় সন্দীপ ঘোষের জরুরি শুনানির আবেদনে সাফ ‘না’ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি সেনের বেঞ্চের। ‘জরুরি ভিত্তিতে শুনানির প্রয়োজন নেই’, অভিমত বিচারপতির।

উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় পড়ুয়া চিকিৎসকের নিথর দেহ। ঘটনার পর থেকেই অধ্যক্ষ পদ থেকে সন্দীপ ঘোষের বরখাস্তের দাবিতে সোচ্চার হয় সব মহল। সেই মতোই পদত্যাগও করেন সন্দীপ ঘোষ। এর পর প্রথমে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন প্রাক্তন অধ্যক্ষ। পরে আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলাতেও তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই।

যদিও চার্জশিটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের কোনও প্রত্যক্ষ যোগ নেই। শুধুমাত্র তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগই রয়েছে। তারপরেও সন্দীপের বিরুদ্ধে গোটা চিকিৎসক মহলের ক্ষোভের পাহাড়।


সন্দীপ গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবিতে সুর চড়ায় চিকিৎসক মহল। সরব হন তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনও। এই আবহে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি তথা তৃণমূলের অপর চিকিৎসক নেতা সুদীপ্ত রায়কে চিঠি পাঠানো হয় আইএমএ-র রাজ্য শাখার তরফে। সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে শান্তনু সেনও সই করেছিলেন। সেই মতো গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্দীপ ঘোষের ডাক্তারির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।

গ্রেপ্তারির পর গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্দীপ ঘোষকে শোকজ করেছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল। বেঙ্গল মেডিক্যালস কাউন্সিল ১৯১৪, সাবসিকোয়েন্ট অ্যামেন্ডমেন্ট ২৫(এ)(২) অ্যাক্ট-এর অ্যাপ্লায়েড মেডিক্যাল কাউন্সিল ৩৭(৩) ধারায় শোকজ করা হয়েছিল তাঁকে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ৩ দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে সন্দীপ ঘোষ। জবাব না দিলে অথবা জবাব সন্তোষজনক না হলে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।

সন্দীপ ঘোষের তরফে নোটিসের উপযুক্ত জবাব না মেলায় নথিভুক্ত চিকিৎসকদের তালিকা থেকে তাঁর নাম অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সন্দীপ ঘোষ। তড়িঘড়ি শুনানির আর্জিও জানান। কিন্তু সোমবার সন্দীপের আবেদন নাকচ করল হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি সেনের বেঞ্চ। এখনই এই মামলা জরুরি ভিত্তিতে শোনার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই, এমনটাই মন্তব্য বিচারপতি। পুজোর পর নিয়মিত বেঞ্চেই হবে শুনানি।