নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জামিন পেলেন তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। বুধবার শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কুন্তলকের পাসপোর্ট জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। তবে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় জামিন না মেলায় আপাতত জেলেই থাকতে হবে কুন্তলকে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডলকে জেরা করে কুন্তলের নাম উঠে আসে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কুন্তল। অভিযোগ, শিক্ষা দুর্নীতির ১৯ কোটি টাকারও বেশি পৌঁছেছিল কুন্তলের কাছে।
২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি হুগলির তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এর আগে তাঁর বাড়িতে ২৪ ঘণ্টারও বেশি তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা। জামিন চেয়ে প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুন্তল। শীর্ষ আদালত ওই মামলা হাইকোর্টে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সরকার পরিচালিত স্কুলগুলিতে শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের কাছ থেকে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু অভিযুক্ত নেতার ১০০ কোটি টাকারও বেশি চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন কুন্তল ঘোষ। ওএমআর শিট কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ১০০ কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতির যে অভিযোগ ওঠে তার সঙ্গে কুন্তল ঘোষের গভীর যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে।সিবিআইয়ের অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল টাকা অথবা সম্পত্তির উৎসের ব্যাপারে কুন্তল কোনও স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তাঁকে আয়ের উৎস নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ তাঁকে জামিন দেন। ২০২২ সালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই থেকে প্রায় ২৩ মাস জেলে ছিলেন মানিক।
হাইকোর্ট থেকে জামিন মিললেও বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয় মানিককে। শর্তগুলি হল – তদন্তকারী অফিসারকে মোবাইল নম্বর দিতে হবে। এই মামলার কোনও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না। তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি ছাড়া বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না মানিক। পাসপোর্ট নিম্ন আদালতে জমা দিতে হবে পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ককে।