বৃহস্পতিবার কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন নিয়ে রাজ্য এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়(দাস) ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থান কী, তা দুই সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে’।রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্রুত করতে হবে, এই মর্মে এবার কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।আদালতকে জানাতে হবে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কী পদক্ষেপ করা হবে। জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নিয়মে বলা রয়েছে নিয়মিত ছাত্র নির্বাচন করাতে হবে। কিন্তু বহু বছর ধরে নির্বাচন বাকি রয়েছে হচ্ছে না’।
রাজ্যের আইনজীবী জানান, ‘কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে’। রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞনম জানান , ‘কিছু অবস্থান নিন। নির্বাচন করা হচ্ছে না। পড়ুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আওতায় থাকা কলেজগুলিতে ২০১৭-য় ছাত্র নির্বাচন হয়েছিল। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-এ, যাদবপুরে ২০২০-তে তা হয়। তার পর থেকে কোনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সাংসদ নির্বাচন হয়নি। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তিন মাস সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তিন মাস নয়, তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে, কবে এবং কীভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা হবের
এই বিষয়ে মামলাকারী আইনজীবী উদয় চট্টোপাধ্যায় ও সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, ‘রাজ্যের অন্যান্য নির্বাচন বন্ধ হয়নি, তাহলে শুধুমাত্র ছাত্র সংসদ নির্বাচনেই সমস্যা কেন? লিংডো কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এই নির্বাচন হওয়া বাধ্যতামূলক। তাছাড়া, ২০১৩ সালের পর কোনও নির্বাচন না হলেও পুজো ও ফেস্টের জন্য টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে নিয়মিত। সেটাই বা কীভাবে হচ্ছে?’ এই বিষয়ে এদিন এমনই প্রশ্ন তুলে দেন মামলাকারীর আইনজীবী। এদিকে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, নির্বাচনের অনিয়ম ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে। প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় এদিন বলেন, ‘প্রতিবার এই ধরনের মামলায় রাজ্য সময় চেয়ে নেয়। তারপর ভোটার লিস্ট প্রস্তুত হলে ফের আদালতে আসে। এবার আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান নিতে হবে। জানাতে হবে, কবে নির্বাচন হবে”।রাজ্যের তরফে আইনজীবী শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, “আমাদের আরও সময় প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে’। তবে রাজ্য সরকার যখন আরও তিন মাস সময় চায়, তখন আদালত সেই আবেদন খারিজ করে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তিন সপ্তাহের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানাতেই হবে।