• facebook
  • twitter
Monday, 16 September, 2024

নিম্ন আদালতের বিচারককে ‘আইন’ মেনে কাজ করতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন, ২০ জুন, কলকাতা:  চলতি সপ্তাহে নিম্ন আদালতের এক  বিচারকের বিরুদ্ধে  কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হন এক জেলা পুলিশ সুপার। মূলত এক্তিয়ার-বহির্ভূতভাবে বারবার নিম্ন আদালতে বিচারকের অহেতুক তলব নিয়ে এই মামলা। মালদহের চাঁচল কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হলেন মালদহের পুলিশ সুপার  প্রদীপকুমার যাদব। গত বুধবার দু’পক্ষের শুনানি শেষে  হাইকোর্ট জানিয়ে

মোল্লা জসিমউদ্দিন, ২০ জুন, কলকাতা:  চলতি সপ্তাহে নিম্ন আদালতের এক  বিচারকের বিরুদ্ধে  কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হন এক জেলা পুলিশ সুপার। মূলত এক্তিয়ার-বহির্ভূতভাবে বারবার নিম্ন আদালতে বিচারকের অহেতুক তলব নিয়ে এই মামলা। মালদহের চাঁচল কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হলেন মালদহের পুলিশ সুপার  প্রদীপকুমার যাদব। গত বুধবার দু’পক্ষের শুনানি শেষে  হাইকোর্ট জানিয়ে দিল ‘এভাবে পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠানো ওই বিচারকের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না’। নিম্ন আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে যান জেলার পুলিশ সুপার। চাঁচল আদালতে  পুলিশ সুপার তিনবার তলবের  নির্দেশ মেনে হাজিরা দেননি। উল্টে বিচারকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন জানালেন মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসে এই মামলা ওঠে। নিম্ন আদালতের বিচারকের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।

অভিযোগ, এক্তিয়ার-বহির্ভূতভাবে তলব করছেন বিচারক। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদবের পক্ষে আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টে  আবেদন জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ চাঁচল আদালতের বিচারকের ওই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘যেভাবে পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠিয়েছেন বিচারক, তা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না’। অভিযোগ, একাধিকবার নিজের চেম্বারে পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠিয়েছেন ওই বিচারক।

হাইকোর্ট সূত্রে প্রকাশ, ঘটনার সূত্রপাত একটি জামিন সংক্রান্ত মামলাকে কেন্দ্র করে। ওই মামলায় পুলিশের কাজে অসন্তুষ্ট হন চাঁচল আদালতের  অতিরিক্ত দায়রা ও জেলা বিচারক। প্রথমে ১৪ মে জেলা পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি না গেলে ফের ২০ মে তলব করা হয়। সেদিনও যাননি পুলিশ সুপার। এরপর ৪ জুন ফের পুলিশ সুপারের ডাক পড়ে চাঁচল আদালতে। কিসের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ সুপারকে ডাকলেন বিচারক? কোন আইনের ভিত্তিতে এভাবে নিজের চেম্বারে তলব করা হল? প্রশ্ন খোদ কলকাতা হাইকোর্টেরই। রাজ্যের প্রত্যেক জেলায় জেলা বিচারকের একটি নজরদারি কমিটি আছে। পুলিশ সুপার সহ জেলার একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক সেই কমিটিতে আছেন। কোনও বক্তব্য থাকলে  সংশ্লিষ্ট বিচারক সেখানে জানাতে পারতেন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ চাঁচল আদালতের ওই বিচারকের কাছে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে পুলিশ সুপারের অভিযোগ শুনে চাঁচল আদালতের বিচারকের নির্দেশ খারিজ করে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ।

জানা গিয়েছে এক জামিন সংক্রান্ত মামলায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন চাঁচল কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক। এরপর তিনি মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমারকে ১৪ মে, ২০ মে এবং ৪ জুন ডেকে পাঠিয়েছিলেন।১৪ মে পুলিশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘পর্যবেক্ষণ’ এর পর ২০ মে বিকেল সাড়ে ৪টায় পুলিশ সুপারকে ফের চেম্বারে ডেকে পাঠান। পুলিশ সুপার না যাওয়ায় ২০ মে ফের একই নির্দেশ দেন বিচারক। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুপার। গত বুধবার  এই মামলা হাইকোর্টে উঠলে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। কেন কোন আইনে পুলিশ সুপারকে বারংবার বিচারক নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠান?  তা একেবারেই স্পষ্ট নয় বলে পর্যবেক্ষণে জানায় হাইকোর্ট। অতিরিক্ত বিচারকের কোনও বক্তব্য থাকলে জেলা বিচারককে নিয়ে যে নজরদারি কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে কেন জানালেন না সেই প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্ট।গোটা ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি ঘোষের নির্দেশ, ‘ ভবিষ্যতে নিম্ন আদালতের ওই বিচারক তার কাছে বিচারাধীন মামলার ক্ষেত্রে আইনের পথ মেনেই কাজ করবেন বলেই আদালত আশা রাখছে।’  নিম্ন আদালতের দেওয়া তিনটি নির্দেশই খারিজ করে  কলকাতা হাইকোর্ট।