গত শুনানিতে আদালত সিবিআইয়ের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিল, আরজি কর কাণ্ডে গণধর্ষণ হয়েছিল কি না।শুক্রবার সেই প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়ে সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার গণধর্ষণ হয়নি। ধর্ষণের ঘটনায় একজনই জড়িত ছিল। তদন্তকারীদের দাবি, ডিএনএ পরীক্ষায় ঘটনাস্থল থেকে একজন পুরুষের নমুনাই পাওয়া গিয়েছে। এই মামলায় মোট কত জনের বয়ান নেওয়া হয়েছে তা পরবর্তী শুনানিতে জানাতে বলেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় শুক্রবার আদালতে তিন পাতার ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দিয়েছে সিবিআই। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, তাঁরা নতুন করে তিনজনের উপর নজর রাখছে। তাঁদের কল রেকর্ডিংও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও বেশকয়েক জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সিবিআই যে নতুন করে তদন্ত করছে, তার প্রমাণ শুক্রবার আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এদিন হাইকোর্ট এই মামলায় কলকাতা পুলিশের কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠিয়েছে। দুই সপ্তাহ পরে আগামী শুনানিতে তা পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
ই ঘটনা কেন গণধর্ষণ নয় তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। ঘটনাস্থল থেকে একজন পুরুষেরই ডিএনএর নমুনা মিলেছে। তিনি হলেন দোষী সঞ্জয় রায়। এরপর আদালতের তরফে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে এখন কী করছে সিবিআই। সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, আরজি করের ঘটনায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে কি না, তা এখন দেখা হচ্ছে। তথ্যপ্রমাণ লোপাটে কারা জড়িত রয়েছেন, তা-ও দেখা হচ্ছে। যাঁরা ঘটনার সময়ে হাসপাতালে ছিলেন, তাঁদের মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তদন্তে কতদিন সময় লাগবে তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে সিবিআই। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ২৪ জনের বয়ান রেকর্ড করা ছাড়াও হাসপাতালের আরও বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আগামী ২৮ এপ্রিল সিবিআইকে পরবর্তী ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তার আগে আগামী ১৬ এপ্রিল মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় দু’জনেই জামিন পেয়েছেন। তবে আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় এখনও জেলবন্দি সন্দীপ।
অপরদিকে ফের তদন্ত শুরু হওয়া নিয়ে আপত্তি করেনি রাজ্য। রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পুনরায় তদন্ত শুরু নিয়ে অসুবিধা নেই। তবে আইন অনুযায়ী, এই অবস্থায় এসে আরও তদন্তের আবেদন করা যায় কি না তা নিয়ে পশ্ন তুলেছেন