কলকাতা পুরসভার অনুমোদনপ্রাপ্ত নির্মীয়মাণ বাড়ির কাজ আটকে দিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ক্ষোভের মুখে পড়লেন বিল্ডিং বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকেরা। ক্ষুব্ধ মেয়র তাঁদের স্পষ্টই বলেন, ‘ আপনাদের ইন্সপেক্টরেরা টাকা খেতে চায় বলেই পুরসভার বদনাম হয়।’ শনিবার তখন কলকাতা পুরসভায় ‘ টক টু মেয়র ‘ কর্মসূচী চলছিল। সে সময় বড়বাজার থেকে পরশ রামপুরিয়া নামে এক ব্যক্তি মেয়রকে জানান, তিনি কলকাতা পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। রবীন্দ্র সরণিতে তাঁর বাড়ির প্ল্যান অনুমোদন করেছে কলকাতা পুরসভাই । সেই অনুমতি অনুসারে তিনি ২৭৩ নম্বর রবীন্দ্র সরণিতে তাঁর বাড়ি তৈরি করাচ্ছিলেন। কিন্তু পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ইন্টপেক্টরেরা তাঁর বাড়ির নির্মাণকে ’বেআইনি’ বলে বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁরা নাকি স্থানীয় কয়েকজনের কাছ থেকে এই বাড়ি নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন। বাড়ির মালিক পরশ রামপুরিয়া ফোনে মেয়রকে জানান, বিল্ডিং বিভাগের ইন্সপেক্টরেরা তাঁকে পুরসভার ৪০১ ধারা অনুসারে নোটিস দিয়েছেন। অথচ কলকাতা পুরসভা অনুমোদিত সমস্ত বৈধ কাগজপত্র তিনি ইন্সপেক্টরদের দেখিয়েছেন। তাতেও কাজ হয়নি। তাই অভিযোগের সুরে বাড়ির মালিক পরশ রামপুরিয়া মেয়রকে এ বিষয়ে জানান।
এই অভিযোগ পেয়ে বিল্ডিং বিভাগের ডিজি–সহ উপস্থিত শীর্ষ আধিকারিকদের প্রবল তিরস্কার করেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘আপনাদের ইন্সপেক্টররা টাকা খেতে যায়। যখন তা পায় না, তখন এভাবে হ্যারাসমেন্ট করে। এর ফলে পুরসভার ইমেজ নষ্ট হয়। আপনারা এমন করবেন না । আমি শুধু আপনাকেই একথা বলছি না। সব বোরোকেই বলছি। যেখানে অল্প বিচ্যুতির ক্ষেত্রে পুরসভার রুল ২৫ দিয়েই কাজ হয়ে যায়, সেখানে ৪০১ ধারায় নোটিস দেবেন না । এ নিয়ে খেলা শুরু হয়েছে। এতে আপনার এবং আপনাদের পরিবারের সম্মান যেমন জড়িত , তেমনি সবার উপরে পুরসভার সম্মান এখানে জড়িত।’
সম্প্রতি , অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভাকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়র। আর এদিন সেই পুরসভার বিরুদ্ধেই উঠল বৈধ নির্মাণ আটকে দেওয়ার কাজ। এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বাড়ি করতে গেলে নকশা অনুমোদন করাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে মাইনর ডেভিয়েশন হয়। সেখানে ইন্সপেক্টররা এসে চোখ রাঙায়। এখন এরা দাদাগিরি করছে। মাইনর ডেভিয়েশনের ক্ষেত্রে রুল ২৫ বা ২৬ –এর নোটিস দিয়ে আমরা ব্যবস্থা করে দিই। সেখানেই এরা ৪০১–এর নোটিস দিচ্ছে। কিন্তু ৪০১ তখনই করা যাবে, যখন বড় কিছু বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু এরা ধরে আনতে বললে বেঁধে আনে।’