ব্রিগেডের একদিন পরে পয়লা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্মদিন। সাতাত্তরে পা রাখলেন তিনি সকাল থেকেই শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসলেন বাম-রাজনীতির এই অভিভাবক। সােমবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
তিনি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য একজন জ্ঞানী মানুষ। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় তিনি মানুষের মধ্যে কাটিয়েছেন। দশ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সহজ সাধারণ জীবনযাপনের জন্য তিনি অন্য সকলের থেকে আলাদা। মহৎ এক চরিত্রের উদাহরণ তিনি।
আনন্দের সঙ্গে বাঁচুন তিনি, দীর্ঘজীবী হােন। সােমবার পাম অ্যাভিনিউ -এর অন্তরালে থেকেই কাটল তার শুভ জন্মদিন। কিন্তু তিনি তাে অন্তরালে থাকতে চাননি কোনওদিন। মানুষের মিছিলেই তাে তিনি পা মেলাতে চেয়েছিলেন চিরদিন।
সাদা ধুতি পাঞ্জাবি পরে ব্রিগেডের জনজোয়ারের সামনে মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুঁড়ে বলতে চেয়েছিলেন, সামনে ঘাের অন্ধকার, কিন্তু আমাদের লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। হবেই …। সুস্থ থাকলে ব্রিগেডে জনসভার মুখ হতে পারতেন তিনি। বাম রাজনীতির লাল পলাশ তিনি।
তার আহ্বানে বাম সমর্থকদের জীবনে আসত বসন্তের উচ্ছাস। শারীরিক কারণেই তাকে থাকতে হয়েছে অন্তরালে। রবিবারের ব্রিগেডে উপস্থিত না থাকার যন্ত্রণা’কে তিনি প্রকাশ করেছিলেন চিঠি দিয়ে। ২০১৫ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে তিনি আঠেরাে মিনিট বক্তব্য রেখেছিলেন। যা দলের অনুগামীদের কাছে ছিল অক্সিজেনের মতাে।
২০১৯ সালে লােকসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেড়ে এসেছিলেন নাকে অক্সিজেনের নল লাগিয়ে। সেবার গাড়ি থেকে নামতে না পারলেও তার অ্যাম্বাসাডার গাড়িটা ধুলাে উড়িয়ে নস্ট্যালজিয়ায় ভাসিয়েছিল বিগেডের আগন্তুক জনতাকে।
কিন্তু শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য ২০২১ -এর ব্রিগেডে তিনি বন্দি রইলেন পাম অ্যাভিনিউ-এর বাড়ির অন্ধপুরে। যদিও তার মন পড়ে রইল ব্রিগেডের মাঠে। সেই যন্ত্রণার রেশটুকু মুছে দিতে কি পারল তার জন্মদিন?, তা কি করে দেবে? যিনি লক্ষ লক্ষ বাংলার মানুষের মধ্যে স্বপ্নের জন্ম দেন, আলাদা করে কি তার নিজের জন্মদিন থাকে? বােধহয় থাকে না। শঙ্খ ঘােষের কবিতার কথায় বলতে হয় কাল তার জন্মদিন, জন্মদিন আজ।