নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘দাদু খায়, নাতি খায়’ — টিভি, রেডিওতে একটা সময় যে বিজ্ঞাপনটি ছিল খুবই জনপ্রিয়! একটা সময় যে মুখরোচক খাবারটি না হলে বাঙালি জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যেত। চলতি পথে, বাসে, ট্রেনে, অফিসে, স্কুলে কাজের জায়গায় খাবারটি ছিল আপৎকালীন ক্ষুধা নিবৃত্তির একমাত্র উপাদান। সেই ব্রিটানিয়া বিস্কুটের তারাতলার ইউনিটটি বন্ধ হয়ে গেল। সোমবার কর্মীরা কাজে গিয়ে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ দেখতে পান। যা বাংলার শিল্পের জন্য বড় দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিছু নয়।
জানা গিয়েছে, কারখানায় স্থায়ী কর্মী ছিলেন ১২২ জন। অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ছিল ২৫০ জন। কোম্পানির তরফ থেকে স্থায়ী কর্মীদের এককালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন, তাঁদের এককালীন ২২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে৷ যাঁরা ৬ থেকে ১০ বছর কাজ করেছেন, এমন কর্মীরা পেয়েছেন ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। তার চেয়েও কম সময় কাজ করেছেন এমন কর্মীদের ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে কোম্পানি৷ ২০০৪ সাল থেকে ব্রিটানিয়া কোম্পানি ক্যাজুয়াল স্টাফ নেওয়া শুরু করে। স্থায়ী কর্মীদের এককালীন টাকা দেওয়া হলেও অস্থায়ী কর্মীরা কেনও টাকা পাননি বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, ১০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন ব্রিটানিয়া কোম্পানি বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে গিয়েছিল৷ ব্রিটানিয়া কোম্পানিতে প্রতিদিন আড়াই হাজার টন উৎপাদন হত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বন্ধই হয়ে গেল কারখানাটি৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে রাজ্যে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য জোর দিচ্ছেন, সেখানে প্রায় শতাব্দী প্রাচীন প্রতিষ্ঠানটির ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়াটা বড় অশনি সঙ্কেত বলে মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক মহল।