জয়দেব সাহা
১
খুব ছোটবেলা থেকেই এই রাস্তাটা বড্ড ভালোবাসে রতন। বাবার হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে বইয়ের গন্ধে মেতে উঠে ও। আর বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে করে না। এই গন্ধ অনেক ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে। কখনও বিপ্লবের ইতিহাস আবার কখনও বা প্রেমের গল্প, সবটাকে আঁকড়ে ধরেই তার সত্তার জন্ম। এই বইপাড়া নিজেও হয়ত বা কখনও কখনও প্রেমে পড়ে। হয়ত বা প্রেমে পড়েছে রতনের! পাঁচ বছরের রতন ছোটবেলা থেকেই কিসের যেন একটা টান অনুভব করে এই জায়গাটায়। বইয়ের গন্ধের সঙ্গে আরও কি কোন গন্ধ মিশে আছে এখানে? কোনও ইতিহাস অথবা আগামীর গন্ধ?
বাড়িতে একটা মস্ত বইয়ের দেশ আছে। বাবার কাছে শুনেছে ঠাকুমা নাকি খুব বই পড়তেন। কিন্তু ঠাকুরদা সারাজীবন ব্যবসা নিয়েই থেকেছেন। কোথায় মাল সাপ্লাই দিতে হবে, কোনও অর্ডারের শেষ তারিখ কত, কোন লোককে মজুরি দেওয়া বাকি সব তার নখদর্পণে। এসবের বাইরে একজন ভালো মানুষও ছিলেন উনি। কোন শ্রমিকের বাড়িতে কে কে আছেন, সব তিনি জানতেন। বিপদের দিনে কখনও একা ছেড়ে দেননি তাদের। বহু মানুষের ছেলেমেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিতেন। সব সময় বলতেন, ‘এত টাকা নিয়ে আমি কি করব? ছেলে বড় হলে নিজে রোজগার করবে। এই টাকা যদি মানুষের কাজে লাগে, আরও দুটো পরিবারের যদি ভবিষ্যৎ দাঁড়িয়ে যায়।’ ঠাকুমার বই পড়াটা খুব পছন্দ করলেও নিজে কখনও কোনও বই উল্টেও দেখতেন না। কিন্তু প্রতি সোমবার উনি বইপাড়ায় যাবেনই যাবেন, আর সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন একগুচ্ছ বই। কোনও কোনও দিন ঠাকুমাও সঙ্গ নিতেন। এসবই শোনা কথা রতনের। নিজের চোখে মানুষটাকে দেখার সৌভাগ্য ওর হয়নি। বাবার বয়স যখন পনেরো বছর, হঠাৎ কোন এক অজানা অসুখে মানুষটা সবাইকে পেছনে ছেড়ে চলে গেলেন। ঠাকুমার তখন নৌকাডুবি অবস্থা, ব্যবসার কোনোকিছুই তো কোনোদিন দেখতে হয়নি। হঠাৎ কী করে সামলাবেন এত কিছু? কিন্তু সব সামলে নিয়েছিলেন, বলা যায় সামলে গিয়েছিল। যে মানুষগুলোর পাশে ঠাকুরদা এতদিন ছিলেন, তারা এবার ঠাকুমার পাশে এসে দাঁড়ালো। সংসারটা একটা বন্যার হাত থেকে আস্তে আস্তে করে মাথা তুলেছিল। বছর দশেকের মাথায় ঠাকুমাও আর থাকলেন না। বাবা তখন সবে একটা কলেজে পড়াতে শুরু করেছে। ব্যবসাটা আরেকবার অনাথ হয়ে গেল যেন! কিন্তু ওই যে ঠাকুরদা বেশ কিছু স্তম্ভ তৈরি করে গিয়েছিলেন, সুনামি এলেও বোধহয় তাদের নড়াতে পারত না। কী জানি, হয়ত বা সুনামি এসেছিল, পারেনি নড়াতে। এই বইপাড়ায় কি তবে ঠাকুরদা আর ঠাকুমার অজানা গন্ধ পায় রতন? বাড়িতেও দুটো ঘর শুধু বইতেই ভর্তি। সারাটা দিন ওখানে মুখ গুজে কাকে খুঁজে বেড়ায় ও? বইয়ের পাতার মধ্যে নিজেকে সমর্পণ করে কিসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায়? মাত্র পাঁচ বছর বয়সে কত কী পড়ে ফেলেছে, রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্কিম, নজরুল থেকে মধুসূদন আবার আধুনিক পত্রপত্রিকা, সবই গিলে ফেলে ওই বাচ্চাটা।
সোমবারের রুটিনটা খুব স্থির। বিকেল হলেই বাবার হাত ধরে রতনের এখানে আবাহন। ঘুরতে ঘুরতে যখন বেলা একটু বেড়ে যায়, বাবা একটা চায়ের দোকানে এসে বসে। রতনের কপালে জুটে বিস্কুট অথবা ঘুগনি মুড়ি। রাস্তার উল্টোপাশে কোঁকড়ানো চুল আর ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি নিয়ে বাবার হাত ধরে আরেকটা চায়ের দোকানে বসে থাকে মধুরিমা। এক পলকে তাকিয়ে থাকে এদিক সেদিক। কখনও কখনও চোখ আটকায় রতনের দিকে। চোখের ঈশারায় গল্প হয় দুই বাচ্চা ছেলেমেয়ের। সে কত গল্প! কোনও ভাষা নেই যেখানে, শুধুই ঈশারা। কখনও বা দু’জনে খিলখিল করে হেসে উঠে। ওই ইশারাতেই হয়ত বা লুকিয়ে আছে, ‘ওই তুই নন্টে ফন্টে পড়েছিস?’
‘হ্যাঁ, সবগুলো পড়ে নিয়েছি। তুই বাঁটুল পড়েছিস? আর কাকাবাবু?’ অপর প্রান্ত থেকে হয়ত বা উত্তর আসে।
সব বার্তা তো শব্দ দিয়ে আঁকা যায় না। আঁকা উচিতও নয় হয়ত! প্রকৃতি শব্দহীন গল্প লিখতেও বোধহয় বড্ড ভালোবাসে।
আরেকটা শব্দহীন গল্প লিখত অভীক আর প্রিয়া। সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বাবার সঙ্গে চলে আসত ওরা। রাস্তার দু’ধারে দুটো চায়ের দোকানে ওদের সারাদিন কাটে। বাবার ফরমাসে কখনও চা বানানো, কখনও বা খদ্দেরকে বিস্কুট এগিয়ে দেওয়া। আর সুযোগ পেলেই শুরু হত ইশারায় গল্পের পাহাড় বোনার প্রতিযোগিতা। কলকাতা শহর থেকে খানিকটা দূরে দু’জনেরই বাড়ি। দু’জনেই অবশ্য দুটো ভিন্ন দিকের ট্রেন ধরে। বইয়ের গন্ধ ওদের কোনোদিনই ভালো লাগেনি। নাকি চায়ের ধোঁয়ার গন্ধ দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে দেওয়া হয়েছে সেই গন্ধ? ইশারায় ওরাও কথা বলে, হয়ত বলে ‘ওই, তুই চা ছাড়া আর কী কী বানাতে পারিস রে?’
‘আমি তো অনেক কিছু পারি। মোমো বানাস তুই? জানিস আমার মোমো খেতে খুব ভালো লাগে।’, অপরপ্রান্ত থেকে হয়ত শব্দহীন উত্তর চলে আসে।
সোমবারের সন্ধ্যাটা এই চারটে নিষ্পাপ প্রাণ এক জায়গায় জড়ো হয়। হ্যাঁ, দূরত্ব খানিকটা থাকে। ওই মাঝখানের রাস্তা আর তার মাঝের ট্রামলাইনটুকু। আচ্ছা ট্রামলাইনও তো গল্প লেখে, কত প্রেমের আবার কখনও বা ইতিহাসের গল্প। একটা শহরের বেড়ে ওঠার গল্প আবার কত সময়ের অতীত হয়ে যাওয়ার কাহিনী। ট্রামলাইনও কি প্রেমে পড়ে? কার প্রেমে পড়ে? সময়ের নাকি মানুষের; নাকি মানুষের বদলে যাওয়ার? বইপাড়ার প্রেমে পড়েছে কখনও? অথবা বইয়ের গন্ধের প্রেমে? সন্ধে ঘনিয়ে রাত হলে, শেষ ট্রামের প্রেমে পড়েছে কখনও? আচ্ছা এই শহর, রাস্তা, অলিগলি, অথবা ট্রামের শেষ সিটে বসে থাকা যুগলের আবেগঘন মুহূর্তের প্রেমে পড়া যায় না? কলেজ পড়ুয়া দুই তরুণ-তরুণী প্রায় প্রতিদিন বইপাড়ায় এসে হাঁটতে থাকে। হঠাৎ যে সন্ধায় তারা দু’জন দু’জনের হাত ধরে ফেলল, নির্বাক এই ট্রামলাইন কি কখনও সেই মুহূর্তটার প্রেমে পড়েছে? অথবা ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত এক বাবা সারাদিন পরিশ্রম করে হাঁটা পথে শিয়ালদা স্টেশন যাচ্ছে। প্রবল গরমে সারাদিনে অনেক কষ্ট হলেও সে আজ বড্ড খুশি। আজ বাড়ি গিয়ে ছেলের টিউশনির পয়সা দেবে। মেয়ের দুটো বই কেনা বাকি ছিল, সেটাও কিনে নিয়েছে আজ। এই ট্রামলাইন কি প্রেমে পড়েছে এই সন্ধ্যার? বইপাড়া, ট্রামলাইন আর এই শহর প্রতিদিন গল্প লেখে, কখনও বাস্তবের, কখনও আবেগের, আবার কখনও বা ইতিহাসের।
রতনদের ব্যবসাটা এখনও আছে। অনেক পুরোনো মানুষজন আজও হাল ধরে আছে রতনের বাবার সঙ্গে। সময়ের সঙ্গে পরিধিটাও বেড়েছে অনেক। নতুন কত লোক নিয়োগ হয়েছে, কত লোক ছেড়ে চলেও গেছে। অনেকে বয়সের ভারে অবসর নিয়েছেন। সময়ের এই এক বৈশিষ্ট্য, পরিবর্তনের নানান ধারার সাক্ষী থাকে সে। কখনও গল্প লেখে, কখনও বা লেখায়। এই যেমন ঠাকুমা মারা যাওয়ার পর কত কাহিনী লিখে রেখেছে সে। হয়ত ধুলো জমে গেছে আস্তে আস্তে, তবু তো লেখা আছে, শব্দহীন কিছু ভাবনায়। রতনের জন্ম হয়নি তখনও, ওর বাবা-মায়ের বিয়েটাও হয়নি। হঠাৎ একটা পঁচিশ বছরের যুবকের ঘাড়ে প্রচুর দায়িত্ব এসে জুটল। একদিকে কলেজে পড়ানো আবার ব্যবসার হাল ধরা। একেবারেই নাজেহাল দশা। এই অবস্থায় সাহায্যের হাত নিয়ে এগিয়ে এসেছিল সংস্থার পুরোনো সদস্যরা। চোখ বুজে সমস্তটা তাদের উপর ছেড়ে দেয় বাবা। বছর দুয়েক এভাবেই চলেছিল বেশ। সন্ধ্যায় একবার করে খোঁজ নিত। প্রতি রবিবার বিকেলবেলা বাড়িতে চায়ের আড্ডা বসত। সংস্থার লোকজনদের নিয়ে জমে উঠত গল্প। সকলের বাড়ির খবর থেকে শুরু করে রাজ্য ও দেশের রাজনীতি— কোনোকিছুই বাদ পড়ত না। আর এই ফাঁকে ব্যবসার লাভ-লোকসানের আলোচনাও হয়ে যেত। এক বুধবার অতুলকাকা বাড়িতে এসে হাজির। সূর্যমামা তখন ডুব দেবে-দেবে করছে। কলকাতার রাস্তায় কৃত্রিম আলো জ্বলে উঠেছে। বাইরে থেকে ট্রামের শব্দ ভেসে আসছে।
অতুলকাকার বাড়ি নদীয়া জেলায়। ঠাকুরদার আমলেই আমাদের সংস্থায় কাজ করতে এসেছিল। দুই বোনের বিয়েতে ঠাকুরদা অনেক সাহায্য করে। নিজে গিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা দেখে এসেছিল। কাকা নিজে বিয়ে করেনি। ঠাকুমা নাকি কতবার করে বলত, ‘অতুল, এবার সংসারটা বসা বাবু। কতদিন একা একা থাকবি?’ কাকার একটাই জবাব, ‘মন চায় না কাকিমা। ছোটবেলা থেকে দেখেছি বাবা-মায়ের মধ্যে সাংসারিক কলহ। তারপর বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেল। কোথায় যে গেল, আর ফিরে আসেনি। মাঝে মাঝে খুব মনে হত, মানুষটার কি আমাদের কথা একবারের জন্যও মনে আসত না?
তারপর আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠলাম। কলকাতায় এসে কাজে যোগ দিলাম। কাকুর আশীর্বাদে দুই বোনের ভালো ঘরে বিয়ে হয়ে গেল। ‘ব্যস, আমার আর কিছু চাইনা কাকিমা।’ মানুষটা সারাদিন তো অফিস নিয়েই কাটিয়ে দেয়, নিজের কথা আর ভাবে না। মাসে একবার করে দুই বোনের বড়ি যায়, ভাগ্নে, ভাগনিদের জন্য ব্যাগভর্তি উপহার নিয়ে। এতেই মানুষটার খুশি। সেদিন মুখে একগাল চিন্তা নিয়ে বাবার কাছে হাজির। প্রথমে দশ মিনিট কোনও কথা বলেনি। তারপর আস্তে আস্তে বলল, ‘বাবু, খুব অন্যায় হচ্ছে রে। তুই এবার নিজে একটু ব্যবসায় মন দে বাবু। একজন পুরোনো লোক তোর অনুপস্থিতিতে অনেক টাকা নয়ছয় করেছে।’ অতুলকাকাই সেদিন ব্যবসাটাকে অনেক বড় ক্ষতির মুখ থেকে বাঁচিয়েছিল। তারপর থেকেই বাবা আরও বেশি সচেতন হতে শুরু করে। তার ফলও আসতে শুরু করল, ব্যবসাটা বিস্তার পেল ধীরে ধীরে।
২
সময় কিছু গল্প শব্দ দিয়ে লেখে, কিছু গন্ধ দিয়ে আবার কিছু বোধহয় শুধু ভাবনা দিয়েই। এই যেমন একসময় কলকাতার রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ানো ট্রামলাইন আজ থমকে দাঁড়িয়েছে। রাস্তায় উচ্চগতির বাসের ছোটাছুটি কোথায় যেন ট্রাম-লাইনকে ইতিহাসের এককোণে এনে দাঁড় করালো। বর্তমানের আলোয় একটু একটু করে জ্বলছে আর অতীতের স্মৃতিচারণা করছে সে। কখনও বা জায়গা করে নিচ্ছে ভিনদেশীদের উন্নত ক্যামেরায়। আসতে আসতে এগিয়ে চলেছে মোহনার পথে। এই যেমন অতুলকাকা, বয়সের ভারে নুইয়ে পরেছে। এখন আর প্রতিমাসে বোনদের বাড়ি যেতে পারে না। পালা করে একমাস অন্তর যায়। ব্যাগভর্তি জিনিসগুলোর প্রকারেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। এখন সমস্ত ব্যবসা বাবা-মা মিলেই সামলায়। কাকা সবার উপর থেকে শুধু নির্দেশ দেয়। সেই বছর পাঁচের বাচ্চাটা আরও বারোটা শরতের স্বাদ নিয়েছে। সোমবারের রুটিনটা এখনও বদলে যায়নি। বাবা আর আসতে পারে না। আগে মা আসত রতনের সঙ্গে। এখন মায়েরও আর সময় হয় না। কিন্তু সোমবারের বিকেল এখনও স্বাগত জানায় রতনের বংশের তৃতীয় প্রজন্মকে। হ্যাঁ, হয়ত ওর উপস্থিতিতে এখনও বইপাড়া প্রতিবার নতুন করে প্রেমে পড়ে। ঠিক যেমন ভাবে রতন প্রেমে পড়েছিল মধুরিমার। সোমবারের বিকেলে দুই যুবক-যুবতী অনেকটা সময় কাটায়। পুরোনো আর নতুন বইয়ের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে ওরা। কখনও কলেজ স্কোয়ারের পুকুরের ধারে হাতে হাত ধরে কেটে যায় ওদের সারাটা সন্ধ্যা। বইপাড়া হয়ত এখন প্রেমে পড়ে এই যুগলের। অবশ্য আরেকটা প্রেম লুকিয়ে আছে ওর। সেই চায়ের দোকানের ধোঁয়ার প্রেম। না, এখন আর পুরোনো সেই ধোঁয়াটা নেই। ভাঙা দোকানের জায়গায় এখন স্থান পেয়েছে একটা বেশ সুন্দর ঝাঁ-চকচকে দোকান আর তার উল্টো পাশের জায়গাটা ফাঁকা শুনশান হয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতি আওড়াচ্ছে। চায়ের সঙ্গে এখন পাওয়া যায় আরও কত মুখরোচক সব খাদ্য। আর আছে মোমো। প্রিয়ার পছন্দের মোমো এখন ও নিজের হাতেই বানায় আর পরিবেশনের দায়িত্বে থাকে অভীক। দোকানের দুটো আসনে বসে গল্প করে রতন আর মধুরিমা।
ট্রামলাইনটা গল্প আঁকে, আগামীর জন্য ইতিহাসের গল্প। কখনও বা গুনগুন করে গেয়ে ওঠে আর অপেক্ষায় থাকে আবার কখনও কোন পাঁচ বছরের জুটি খিলখিল করে হাসবে। আবার গল্প লিখবে আরেক প্রজন্মের। মধুরিমা চেয়ে থাকে রতনের দিকে। ওর ঝোলা ব্যাগটাতে বইগুলো মুচকি হাসি দিয়ে সন্ধ্যাটাকে আরেকটু মনোরম করে দেয় হয়ত। শব্দহীন ভাষায় মধুরিমা কখনও কখনও জিজ্ঞেস করে, ‘আচ্ছা রতন, তোর ঠাকুরদা যদি আমার বাবার পড়াশোনার খরচের দায়িত্বটা না নিত, তাহলেও কি আমরা এভাবে এখানে বসে থাকতাম?’