একের পর এক বিস্ফোরণে বারবার কেঁপে উঠছে বীরভূম। মুখ পুড়ছে জেলা পুলিশের। পুলিশের বিরুদ্ধে বারবার অভিযােগ উঠেছে কিনারা করতে না পারার।
তাই এবার লাভপুরের বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে জেলা পুলিশ। কয়েকদিন ধরে তল্লাশির পর এবার বড়সড় সাফল্য পেল পুলিশ। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন থানা ১১২টি তাজা বােমা উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে ৬টি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় প্রায় ৩৯৯ জনকে একদিনে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
রাজ্যে লােকসভা নির্বাচন মিটে যাওয়ার পরও জেলাজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় ক্রমাগত অশান্তির খবর মিলেছে। লাগাতার রাজনৈতিক সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটেছে, আহত হয়েছে বিভিন্ন দলের কর্মী-সমর্থকরা। প্রতিটি সংঘর্যে ব্যবহৃত হয়েছে বােমা ও গুলি। কিন্তু কোনও ঘটনারই কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
মল্লারপুর ও লাভপুরে দু’টি বােমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে কিছুদিন আগেই। প্রথম ঘটনাটি ঘটে মল্লারপুরের বাজার সংলগ্ন একটি ক্লাবে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে মল্লারপুরের ওই ক্লাবে মধ্যরাতে মজুত বােমা ফেটে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণে ক্লাবের ঘরের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটায় কোনও হতাহত হওয়ার ঘটনা না ঘটলেও আশঙ্কা ছিল।
অন্য ঘটনাটি ঘটে লাভপুরের দ্বারকা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে পরিত্যক্ত আবাসনে বিস্ফোরণে উড়ে যায় বাড়ি। এই বিস্ফোরণ স্থল থেকে ৩০ মিটার দুরে ক্যাম্পাসের ভিতরেই ছিল পুলিশ ফাঁড়ি। এই ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে অভিযুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে। এই দুটি ঘটনার জেরে দুই থানার দুই পুলিশ আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে।
শনিবার রাতভর নানুর, লাভপুর, সদাইপুর , রামপুরহাট, দুবরাজপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় চলে তল্লাশি। জানা গেছে, তল্লাশিতে নানুর থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩২টি, লাভপুর থেকে ৪০টি, পাড়ুই থেকে ২০টি , সদাইপুর। থেকে ৯টি ও কঁকড়তলা থেকে উদ্ধার হয়েছে ৯টি বােমা।
এছাড়াও শনিবার রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ৩৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার সকালে পাড়ুইয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সাত্তোর গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী আলেফ মােল্লার বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা।
তাঁর বাড়ির উনুনের মধ্যে প্লাস্টিকের ২টি ড্রাম ভর্তি বােমা দেখতে পায় পুলিশ। পরে বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা সেগুলি উদ্ধার করে।
পুলিশি সূত্রে খবর, আগেভাগেই অভিযানের খবর পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন অভিযুক্ত আলেফ মােল্লা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বােমা উদ্ধারের অভিযান নতুন নয়। তবে এবার বিপুল পরিমাণ বােমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।